হবিগঞ্জে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে আওয়ামী লীগ নেতাসহ তিন হত্যাকাণ্ড
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ ও বানিয়াচং উপজেলায় গতকাল বুধবার ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে আওয়ামী লীগ নেতা ও নারীসহ তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে নবীগঞ্জের শিবগঞ্জ বাজারে এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া, বানিয়াচংয়ের চতুরঙ্গ রায়পাড়া এলাকায় ভাইয়ের হাতে খুন হন এক ব্যক্তি এবং একই উপজেলার দেশমুখ্যপাড়া এলাকায় এক নারীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
নবীগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, বানিয়াচংয়ের বড়ইউরি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক কামাল মিয়া গতকাল বুধবার রাতে নবীগঞ্জ উপজেলার শিবগঞ্জ বাজারে গেলে সেখানে দুর্বৃত্তরা তাঁকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে প্রথমে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে ও পরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে দিবাগত রাত ১টার দিকে মৃত্যু হয় তাঁর।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, ‘নবীগঞ্জের শিবগঞ্জ বাজারে আগে থেকে ওত পেতে থাকা একদল দুর্বৃত্ত কামাল মিয়ার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। চার শিশু এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিল। তবে তারা কাউকেই চিনতে পারেনি। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে।’
এদিকে, বানিয়াচং উপজেলার চতুরঙ্গ রায়পাড়া এলাকায় ছোট ভাই আলী নেওয়াজের (৩০) হাতে বড় ভাই আবু বক্কর (৩৮) খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরেক বড় ভাই মো. আলী আমজাদ জানান, তাঁরা চার ভাই। এর মধ্যে আলী নেওয়াজ সবার ছোট। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। গতকাল রাত ১০টার দিকে আলী নেওয়াজ আবু বকরকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন আবু বকরকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১২টার দিকে ডা. অপূর্ব দাস তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) মোহাম্মদ শেখ সেলিম বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, ঘাতক মানসিক ভারসাম্যহীন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।’
অপরদিকে, বানিয়াচংয়ের দেশমুখ্যপাড়া এলাকায় প্রতিবেশীদের কিল-ঘুষির আঘাতে কমলা বিবি (৫৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল বিকেলে কমলা বিবির বাড়ির নৌকাঘাটে নৌকা রাখাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী মো. লুকু গংদের সঙ্গে তাঁর পুত্রবধূ জমিলা খাতুনের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন জমিলা খাতুনকে মারপিট করে। এ সময় কমলা বিবি পুত্রবধূকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এতে কমলা বিবি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার ওসি মো. এমরান হোসেন জানান, কমলা বিবির মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।