রফিক হারিরি হত্যাকাণ্ডে হিজবুল্লাহর সদস্য দোষী সাব্যস্ত
লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিকি হারিরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় দেশটির শিয়া মতাদর্শীগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর এক সদস্যকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল।
আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, রফিক হারিরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয় হিজবুল্লাহর পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে একজন মারা যান। অভিযুক্ত বাকি চারজনের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকায় অন্য তিনজনকে অভিযোগ থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছে।
২০০৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বৈরুতে সমুদ্রের সামনের রাস্তায় রফিক হারিরির গাড়িবহরে একটি ভ্যান ভর্তি বিস্ফোরক দিয়ে হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় ২২০ জন আহত হয়েছিল। মারা গিয়েছিলেন রফিক হারিরিসহ ২১ জন।
এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার কার্যক্রমের জন্য জাতিসংঘ সমর্থিত আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। আজ মঙ্গলবার নেদারল্যান্ডসে দ্য হেগে ট্রাইব্যুনালের বিচারক রফিক হারিরিকে হত্যার দায়ে হিজবুল্লাহর ওই সদস্যকে দোষী সাব্যস্ত করেন।
এই হত্যাকাণ্ডের জন্য শুরু থেকে হিজবুল্লাহকে দায়ী করে আসছিল আন্তর্জাতিক মহল। যদিও দলীয়ভাবে শিয়াগোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে।
এ ছাড়া রফিক হারিরির গাড়িবহরের হামলার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে হিজবুল্লাহ।
হিজবুল্লাহ ছাড়াও সিরিয়া সরকারের প্রতি এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায় দেওয়া হয়েছিল।
তবে রফিক হারিরি হত্যাকাণ্ডের দায় থেকে হিজবুল্লাহ ও সিরিয়াকে মুক্তি দিয়েছে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল। বিচারক জানান, তাদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণের অভাব ছিল।
হারিরি ছিলেন লেবাননের সুন্নী মতাদর্শী শীর্ষ রাজনীতিক। তাঁর মৃত্যুর সময়ে তিনি সিরিয়াকে লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার আহ্বানে সমর্থন জানাচ্ছিলেন। লেবাননে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১৯৭৬ সাল থেকে সেখানে সিরিয়ার সৈন্যরা ছিল। তাঁর হত্যার পর হাজার হাজার বিক্ষোভকারী সিরিয়াপন্থী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে আসে। লেবাননের ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তারকারী সিরিয়ার দিকে হারিরির হত্যার জন্য অভিযোগের আঙুল তোলা হয়। সিরিয়া প্রায় ৩০ বছর পর লেবানন থেকে তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়।
ওই ঘটনার পর যে সিরিয়াবিরোধী এবং পশ্চিমাপন্থী দলটি আত্মপ্রকাশ করে, তার নেতৃত্ব দেন হারিরির ছেলে সাদ হারিরি। তিনি দুই মেয়াদে লেবাননের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। ক্ষমতায় আসতে হিজবুল্লাহর সঙ্গে জোট করেন তিনি।