ছেলের লাশ দাফনের সময় খবর পেলেন স্বামীও নেই
নারায়ণগঞ্জ শহরের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় বায়তুস সালাত মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় জুবায়েদের (৭) মৃত্যর পর তাঁর বাবা জুলহাস ফরাজিও মারা গেছেন। একদিনের ব্যবধানে স্বামী আর সন্তানকে এখন পাগলপ্রায় রাহিমা বেগম।
গত শুক্রবার বাসার কাছের মসজিদে ছেলে জুবায়েদকে নিয়ে এশার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন জুলহাস (৩০)। মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্য অনেকের সঙ্গে বাবা-ছেলেও গুরুতর আহত হন।
পরেদিন শনিবার সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে জুবায়েদকে মৃত ঘোষণা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জুলহাস তখনো গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গতকাল রোববার ভোরে জুবায়েদের লাশ দাফনের জন্য গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার বাহেরচর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। লাশ দাফন-কাফনের প্রস্তুতিকালে খবর আসে জুবায়েদের বাবা জুলহাস ফরাজিও আর নেই। জুলহাস ফরাজি নারায়ণগঞ্জ থেকে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। জুলহাস ফরাজি বাহেরচর গ্রামের বাচ্চু ফরাজির ছেলে।
এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাশফাকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। জেলা প্রশাসককে নিহতদের তথ্য দেওয়া হয়েছে।’
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই পর্যন্ত জেলার চারজনের মৃত্যুর খবর প্রাথমিকভাবে শুনেছি।’
শুক্রবার মসজিদে বিস্ফোরণের পর আহত অবস্থায় জুবায়েদকে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। মা রাহিমা বেগম বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ছুটে যান। পরে সেখান থেকে জানানো হয়, জুবায়েদকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। রাহিমা বেগম সকালে ঢাকায় আসেন। সকাল ১০টায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, জুবায়েদ আর বেঁচে নেই।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৭ জন হয়েছে। এরই মধ্যে ২৬ জনের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে আরো নয়জন। এ ছাড়া একজন শঙ্কামুক্ত বলে জানানো হয়েছে।