‘মা, ক্যানসার হলে কী হয়...?’
নিয়তির সঙ্গে তার কোনো শত্রুতা ছিল না। শত্রুতা নেই তার কারো সঙ্গেই। তবু পৃথিবীর আলো দেখতে না দেখতেই তাকে মৃত্যুর বার্তা পাঠিয়েছে নিষ্ঠুর নিয়তি। তিলতিল করে সর্বনাশা মৃত্যু ধেয়ে আসছে তার দিকে।
বরগুনার সানবীম কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড হাই স্কুলের শিশু শ্রেণির খুদে শিক্ষার্থী রাফি। ফুটফুটে চেহারার মিষ্টি হাসির আড়ালে তার শত অভিমান।
মৃত্যু কী, তা জানে না সে। জানে না জন্মরহস্যও। এই বয়সে তা তার জানার কথাও নয়। তবুও স্বজনদের কানাকানি আর ফিসফিস আলোচনায় কিছু একটা বুঝতে পেরেছে সে। তাই তো অসহায় মায়ের কাছে তার অভিমানী জিজ্ঞাসা, ‘মা, ক্যানসার কী? ক্যানসার হলে কী হয়? আমি কি মরে যাব? মরার পরে কী হয়? আমি কি একাই যাব মা? তুমি কি যাবে না আমার সাথে?’
হাসপাতালের মেঝেতে সাত রাজার ধন একমাত্র শিশুপুত্রের এমন করুণ প্রশ্নের জবাবে শুধুই ডুকরে কাঁদেন দরিদ্র মা আয়শা বেগম। আর অসহায় মা-ছেলের প্রশ্নোত্তরের এমন করুণ দৃশ্য দেখে চোখ মোছেন আশপাশের রোগী ও তাঁদের স্বজনরা।
বরগুনার পশ্চিম বরগুনা এলাকার সদর রোডে দরিদ্র চা দোকানি মনোয়ার হোসেনের একমাত্র শিশুপুত্র আতিকুর রহমান রাফি। সম্প্রতি তার ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়েছে। বর্তমানে সে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আতিকুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে ডি ব্লকের (তৃতীয় তলা) ১০১ নম্বর কক্ষের ১ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন।
চিকিৎসক ডা. আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, শিশু রাফিকে সঠিক চিকিৎসা দিয়ে সম্পূর্ণ আরোগ্য করা সম্ভব। এ জন্য ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন পড়বে এবং দুই থেকে তিন বছর সময় লাগবে।
বরগুনার সানবীম কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস জানিয়েছেন, শিশুটির বাবা-মা দরিদ্র। রাফির চিকিৎসা ব্যয় সংকুলানের সামর্থ্য তাঁদের নেই। সানবীম স্কুলের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের পক্ষ থেকে সামান্য কিছু সহযোগিতা তাঁরা সংগ্রহ করেছেন। শিশু রাফির চিকিৎসা সহায়তায় এগিয়ে আসতে সবাইকে আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, রাফির চিকিৎসায় হৃদয়বান ও সচ্ছল ব্যক্তিদের সহায়তা চেয়েছেন তার বাবা-মা। সহযোগিতা পাঠানোর জন্য বিকাশ নম্বর খোলা হয়েছে। বিকাশ নম্বর ০১৭৩৫১৩২২৭১। ব্যাংক হিসাব নম্বর—মো. আমিনুল ইসলাম, সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর-১০১৫, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, বরগুনা শাখা, বরগুনা।