চিরনিদ্রায় মানিকগঞ্জের সাবেক সাংসদ সামসুদ্দিন
মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সামসুদ্দিন আহমেদ ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স ছিল ৭৫ বছর।
তাঁর ছোট ছেলে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য শাহাবুদ্দিন চঞ্চল মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার পর গত ৩০ নভেম্বর তাঁর বাবা সামসুদ্দিন আহমেদকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১ ডিসেম্বর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়। পরের দিন তাঁর করোনা পজিটিভ ফল পাওয়া যায়। এরপর আরেক দফা তাঁর বাবার পজিটিভ রিপোর্ট আসে। কিন্তু গতকাল নমুনা পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। পরে গভীর রাতে তিনি মারা যান।
এদিকে আজ রোববার জোহরের নামাজের পর মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পাটগ্রাম অনাথ বন্ধু স্কুল মাঠে সামসুদ্দিন আহমেদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে ভেলাবাঁধ গ্রামের কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম মান্নান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক ও পিপি আব্দুস সালাম, মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম, সাবেক মেয়র মো. রমজান আলী, হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সায়েদুর রহমান, সিংগাইর উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবুল বাসার সবুজসহ জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সামসুদ্দিন আহমেদ ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হরিরামপুর-শিবালয় এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দেন। সর্বশেষ তিনি মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন।
মরহুম সামসুদ্দিন আহমেদ ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, দুই মেয়াদে ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত হারুকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
সামসুদ্দিন আহমেদ ১৯৪৫ সালে হরিরামপুর উপজেলার মির্জাগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জগন্নাথ কলেজ (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও দুই ছেলেসহ আত্মীয়-স্বজন ও অসংখ্য গ্রণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর বড় ছেলে দেলোয়ার হোসেন মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ছোট ছেলে শাহাবুদ্দিন চঞ্চল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় উপসম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।