সিরাজগঞ্জের ৮১ বিদ্যালয়ের মেধাবীরা পেল বৃত্তি
প্রতিবছরের মতো এবারও খাজা মোজাম্মেল হক (র.) ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠান। আজ বৃহস্পতিবার সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার চৌবাড়ী ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ফাউন্ডেশনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উৎসবমুখর এ অনুষ্ঠানে সিরাজগঞ্জ জেলার ৮১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অষ্টম ও দশম শ্রেণীর ৩১৩ জন মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে বৃত্তি ও সম্মাননা সনদ এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় ১০৮৮ জন জিপিএ ৫ প্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীকে সম্মাননা সনদ প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাত হাজারেরও বেশি মেধাবী শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক, আমন্ত্রিত অতিথি এবং বিভিন্ন স্তরের মানুষের পাশাপাশি খাজা মোজাম্মেল হক (র.) ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাজা মোজাম্মেল হক (র.) ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খাজা টিপু সুলতান। তিনি মেধাবী শিক্ষার্থীদের হাতে বৃত্তির নগদ অর্থ ও সম্মাননা সনদ তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে খাজা টিপু সুলতান বলেন, ‘আমি কথা বলার চেয়ে কাজ করতেই পছন্দ করি এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। কথা না বলে কাজ করে গেলেই সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করা সম্ভব।’ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি প্রতিদিনের নিজ নিজ কর্মের জন্য রাতে নিজ নিজ কর্মের সুক্ষ্ম হিসাব করি, অনুতপ্ত হয়ে খোদার কাছে ক্ষমা চাই— অবশ্যই তিনি আমাদের ক্ষমা করে দেবেন। রাসুলে পাক (স.)-এর শিক্ষা অনুযায়ী ওলি আল্লাহগণের জীবনের আদর্শ চর্চা করে আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে জীবনকে উন্নত করা সম্ভব। প্রত্যেকেই যদি আমরা অপরের দুঃখে ব্যথিত, অন্যের আনন্দে আনন্দিত হই, অপরের স্বার্থকে প্রাধান্য দেই তবেই এ দেশ ও জাতি নিশ্চিতভাবে একটি আদর্শ এবং উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বের কাছে সুপ্রতিষ্ঠিত হব, এ ব্যাপারে কোনোই সন্দেহ নেই।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিরাজগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিফা নূসরাত। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস, কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুল উদ্দিন সরদার, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন চৌবাড়ী ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল কাদের সরকার। সমাপনী বক্তব্য দেন খাজা মোজাম্মেল হক (র.) ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. শামছুল আলম।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ফাউন্ডেশনের সচিব আলহাজ জোবায়ের হোসেন, কোষাধ্যক্ষ সোহেল হোসেন ইবনে বতুতা, বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী প্রকৌশলী আলহাজ খুরশীদ আহম্মদ, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ আলী ও বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী আরমান খান।
এ ছাড়া উক্ত অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী মনির খান।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ফাউন্ডেশনের বৃহত্তর উত্তর অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী আনসার আলী খান জয়।
কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে নানাবিধ বুদ্ধিবৃত্তিক খেলার সমন্বয়ে ‘মেধায় মাতি’ পর্বটি ছিল অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, অলাভজনক, মানবকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান খাজা মোজাম্মেল হক (র.) ফাউন্ডেশন বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা, সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মাঝে বৃত্তি ও সম্মাননা সনদ এবং খাজা ইউনুছ আলী এনায়েতপুরী (র.)-এর নেছবতভুক্ত দুঃস্থ কর্মক্ষম ভক্তদের মাঝে ‘ছাদকা-ই- জারিয়া’ হিসেবে এককালীন মূলধন প্রদান করে আসছে।