মিয়ানমারে ইন্টারনেট বন্ধ ও সেনা ট্যাঙ্ক মোতায়নের পরও রাজপথে বিক্ষোভ
মিয়ানমারে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা এবং দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় রাস্তায় সেনা মোতায়েন পর নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স ২৪ এ খবর জানিয়েছে।
মিয়ানমারের নির্বাচিত স্টেট কাউন্সেলর অং সান সুচিসহ দেশটির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের আটকের দুসপ্তাহ পরও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। ইয়াঙ্গুনের উত্তরাঞ্চলে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিষয়ে অধ্যয়নরত শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে আজ সোমবার এ বিক্ষোভ শুরু করে।
এদিকে মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি শহরের রাস্তায় সামরিক বাহিনীর অস্ত্রসজ্জিত গাড়িবহর টহল দিতে দেখা গেছে। দেশটিতে রোববার দিবাগত রাত ১টা থেকে প্রায় সব ধরনের ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একে সেনাশাসন বিরোধী বিক্ষোভকারীদের দমন অভিযানের প্রস্তুতির আভাস হিসেবে উল্লেখ করেছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
টানা ৯ দিনের মতো দেশজুড়ে চলা বিক্ষোভে উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যে গতকাল রোববার বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে গুলি ছুড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। তবে সেগুলো রাবার বুলেট নাকি তাজা গুলি, তা জানা যায়নি। এদিন কাচিনের মিতকায়িনা শহর থেকে পাঁচ সাংবাদিকসহ বহু মানুষকে আটক করা হয়।
টেলিকম অপারেটর কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, তাদের রোববার রাত ১টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজধানী নেপিদোর একজন চিকিৎসক বিবিসিকে বলেছেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন রাতে বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাচ্ছে। রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত যে কারফিউ জারি করা হয়েছে, এই সময়টা নিয়ে আমি খুব ভয়ে আছি। কারণ এই সময়েই পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন আমাদের মতো লোকজনকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে।’
ইয়াঙ্গুনে মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদেরকে কারফিউ চলাকালে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের নিন্দা জানিয়েছেন অনেকেই। জাতিসংঘ বলছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বলে অভিযোগ করে বলেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের যৌথ বিবৃতিতে, বৈধ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রতিবাদে রাস্তায় নামা লোকজনের ওপর চড়াও না হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী অং সান সুচি, প্রেসিডেন্ট ইউ উইন মিন্টসহ ক্ষমতাসীন এনএলডি দলের আরো কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে আটক করে।
গত নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সুচির এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু সেনাবাহিনী নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তোলে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি নবনির্বাচিত পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেনাবাহিনী অধিবেশন স্থগিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় এবং বৈঠক শুরুর প্রাক্কালে সুচিসহ অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।