আপনার জিজ্ঞাসা
সূরা ফাতেহার পর আমিন কি বলতেই হবে?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ১৭৪৩তম পর্বে ই-মেইলে সূরা ফাতেহার পর আমিন বলার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন হামিদুজ্জামান সুমন। প্রশ্নোত্তরের অনুলিখন করেছেন রেজাউল করিম।
প্রশ্ন : ইমামের পেছনে নামাজে সূরা ফাতেহা পড়ার পর সবাইকে কি আমিন বলতে হয়? এ বিষয়ে আমি জানতে চাই।
উত্তর : সহিহ বোখারি শরিফে হুজুর পাক (সা.) এরশাদ করেছেন, “যখন ইমাম সাহেব ‘গয়রিল মাকদুবে আলাইহিম ওয়ালাদ্দলিন’ বলবেন, তখন ‘ফাকুলু আমিন’ তোমরা আমিন বলবে।”
সুতরাং এটি জাহারি সালাতের মধ্যে আমিন জোরে বলাটাই হচ্ছে সুন্নাহ এবং বহু হাদিস দ্বারা এটি সাব্যস্ত হয়েছে। বহু বর্ণনার মাধ্যমেও সাব্যস্ত হয়েছে আমিন জোরে বলার বিষয়টি। সেটা ইমাম ও মুক্তাদি সবাই বলবে এবং একসঙ্গে বলবে।
আমিন বলার ফজিলত হচ্ছে, হাদিসের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যার আমিন বলাটা ফেরেশতাদের আমিন বলার সঙ্গে মিলে যাবে, তার পূর্ববর্তী যত গুনাহ আছে, আল্লাহ সুবহানাহতায়ালা সেগুলো ক্ষমা করে দেবেন।’
সুতরাং এটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং যাঁরা এভাবে আমিন বলছেন না, তাঁরা সুন্নাহর অনুসরণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যেহেতু রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অসংখ্য সহিহ হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে, সুতরাং এখানে ইস্তেহাদের কোনো সুযোগ নেই। এটি ইস্তেহাদি মাসআলা নয়। যদিও ওলামায়ে কেরামদের মধ্যে কেউ কেউ ইস্তেহাদ করেছেন। বলেছেন যে, আমিন আস্তে বললেও চলবে। কেউ বলেছেন যে, আমিন না বললেও চলবে।
এটি মাসআলা। কোনো সন্দেহ নেই। তবে মুস্তাহাবের ওপর এখতেলাফ রয়েছে। কেউ আমিন না বললেও তার নামাজ হয়ে যাবে। কিন্তু এর যে ফজিলত রয়েছে, এ বিশাল ফজিলত তিনি লাভ করলেন না এবং এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর যে হাদিসগুলো রয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে সুন্নাহ তিনি অনুসরণ করতে পারলেন না।
এ জন্য আমরা বলছি, মুস্তাহাব নিয়েও যদি কেউ রাসূল (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ করে থাকে, অবশ্যই তিনি এর যে ফজিলত রয়েছে, সে ফজিলত অবশ্যই পাবেন।