পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন তাঁর মার্কিন সফরকে সফল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তনি ব্লিংকেনের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে আর্ল রবার্ট মিলারকে জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. মোমেন রাষ্ট্রদূতকে তাঁর বৈঠকের বিষয়ে জানিয়েছেন। তিনি মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে মার্কিন জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ রাষ্ট্রদূত জন কেরি, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং পাঁচজন মার্কিন সংসদ সদস্যের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি ইউএস চেম্বারস, নিউলাইনস ইনস্টিটিউট ও কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস (সিএফআর) আয়োজিত তিনটি অনুষ্ঠানে তাঁর অংশগ্রহণ সম্পর্কে জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারকে আবদুল মোমেন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে জানিয়েছেন। তিনি বৈঠকে মিয়ানমারের ওপর নজরদারি ও চাপ দেওয়ার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি বিশেষ দূত নিয়োগের অনুরোধ করেছিলেন; এ বিষয়টি তিনি মিলারকে বলেছেন। তিনি মার্কিন আইনজীবীদেরও রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কথা বলার জন্য বৈঠকে অনুরোধ করেছিলেন। মোমেন মিয়ানমারের জিএসপি সুবিধা স্থগিত এবং যুক্তরাষ্ট্রে মিয়ানমারের ওপর অর্থনৈতিক অনুমোদন আরোপেরও আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি মার্কিন প্রশাসনকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দণ্ডিত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে শিগগিরই বাংলাদেশে পাঠানোর পথকে সহজ করার অনুরোধ করেছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন সংসদ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠককালে দেশটিতে নিবন্ধিত বাংলাদেশিদের বৈধতা দেওয়ারও আহ্বান জানান। তিনি বিশেষত বৈদ্যুতিক যানবাহন পাঠানোর মাধ্যমে বাংলাদেশে আরও নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রবর্তনের জন্য মার্কিন সহযোগিতা কামনা করেন।
ইউএস চেম্বারের সঙ্গে বৈঠককালে ড. মোমেন বাংলাদেশের রপ্তানিতে মার্কিন শুল্ক তিন বছরের জন্য স্থগিত চেয়েছেন এবং মার্কিন কটন ব্যবহারের শর্ত পূরণের বিনিময়ে বাংলাদেশি তৈরি পোশাককে শুল্ক থেকে ছাড় দেওয়া যেতে পারে বলেও প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি এবং মার্কিন বিশেষ দূত জন কেরি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দুটি দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে রাজি হয়েছেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষিকী উদযাপন এবং আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এ ছাড়া রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি মার্কিন সংসদ সদস্যদের একটি গ্রুপে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এই সফরের সময় রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশ-মালিকানাধীন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।