করোনায় আক্রান্তের গুজবের পর তানজানিয়ার প্রেসিডেন্টের মৃত্যু
আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলি (৬১) মারা গেছেন। হৃদরোগের জটিলতায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ভাইস প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান এই মৃত্যুর তথ্য জানান। তবে তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন বলে দেশটিতে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এ কথা বলা হয়েছে।
আফ্রিকার যেসব নেতারা নভেল করোনাভাইরাসকে হালকাভাবে নিয়েছিলেন, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছিলেন, মাগুফুলি তাঁদের মধ্যে অন্যতম। করোনা ঠেকাতে প্রার্থনা এবং আয়ুর্বেদিক উপাদানসিক্ত গরমপানির ভাপ নিতে বলতেন তিনি।
গত বছরের জুনে তানজানিয়াকে কোভিড-১৯ মুক্ত ঘোষণা করেন মাগুফুলি। মাস্ক পরার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ঠাট্টা-মশকরাও করতেন তিনি। ভাইরাস মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশগুলোর কড়াকড়ি নিয়েও হাস্যরস করতেন মাগুফুলি।
গত বছরের মে মাসের পর থেকে দেশটিতে কতজন করোনায় মারা গেল বা আক্রান্ত হলো, তার কোনো তথ্যই প্রকাশ করা হয় না। এমনকি করোনার টিকা কেনা হবে না বলেও জানিয়ে দেয় তানজানিয়া সরকার।
প্রেসিডেন্ট অসুস্থ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন গুজব ছড়ানোর দায়ে চারজনকে আটক করা হয়েছে বলে গত সোমবার জানায় পুলিশ।
বিরোধী দলীয় লোকজন গত কয়েকদিন ধরে বলে আসছিলেন, প্রেসিডেন্ট মাগুফুলি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে রাষ্ট্রীয় বা প্রেসিডেন্টের পারিবারিক কোনো তরফেই নিশ্চিত করা হয়নি।
গত দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে লোকচক্ষুর আড়ালে ছিলেন প্রেসিডেন্ট মাগুফুলি। ফলে গুজব দানা বাধতে থাকে।
বিরোধী দলীয় নেতা টুন্ডু লিসু বিবিসিকে বলেন, ‘নির্ভরযোগ্য লোকজন জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট মাগুফুলি করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেনিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।’
দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, ভাইস প্রেসিডেন্ট সলুহু হাসান প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন এবং পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করবেন। গত বছর দায়িত্ব নিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলি।
সংবিধান মোতাবেক, ১৪ দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। এই ১৪ দিন সময় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
২০১৫ সালের অক্টোবরে নিজের জন্মদিনে নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন জন মাগুফুলি। গত বছর নির্বাচিত হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হন তিনি।