বাদশাহর হাতে সমর্পণ করছি : জর্ডানের প্রিন্স হামজা
জর্ডানের সাবেক ক্রাউন প্রিন্স (যুবরাজ) হামজা বিন হুসেইন দেশটির বাদশাহ আব্দুল্লাহ ও সংবিধানের প্রতি অনুগত থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা জানান।
এর আগে হামজা বিদেশিদের সঙ্গে যোগসাজসে দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নষ্টের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গৃহবন্দী ছিলেন। জর্ডানের রাজপ্রাসাদ এ তথ্য জানিয়েছে। তিনি এ সংক্রান্ত একটি পত্রেও স্বাক্ষর করেছেন। এর মাধ্যমে দেশটির রাজদ্বন্দ্ব প্রশমিত হচ্ছে।
গত শনিবার ভিডিও বার্তায় তাঁকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন প্রিন্স হামজা। পরদিন জর্ডানের উপপ্রধানমন্ত্রী আয়মান সাফাদি সাবেক ক্রাউন প্রিন্সের বিরুদ্ধে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার অভিযোগ আনেন। এ নিয়ে উত্তেজনা প্রশমনে বাদশাহ তাঁর চাচা রাজপুত্র হাসানকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।
এরপর গতকাল সোমবার জর্ডানের রাজপ্রাসাদ থেকে প্রকাশিত প্রিন্স হামজা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমি নিজেকে বাদশাহর হাতে সমর্পণ করছি। জর্ডানের প্রিয় হাশেমি রাজত্বের সংবিধানের প্রতি আমি অনুগত থাকব।’ পাশাপাশি হামজা তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দেশবিরোধী চক্রান্তের অভিযোগও অস্বীকার করেছেন। খবর বিবিসির।
হামজা জর্ডানের প্রয়াত বাদশাহ হুসেইনের বড় ছেলে ও বর্তমান বাদশাহ আবদুল্লাহর সৎভাই। তিনি ব্রিটেনের হ্যারো স্কুল ও স্যান্ডহার্স্টের মিলিটারি একাডেমির গ্রাজুয়েট এবং যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। কাজ করেছেন জর্ডানের সশস্ত্র বাহিনীতেও।
হামজা বাদশাহ হুসেইনের প্রিয় ছেলে ছিলেন। ১৯৯৯ সালে তাঁকে জর্ডানের ক্রাউন প্রিন্স বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু বাদশাহ হুসেইনের মৃত্যুর পর হামজাকে উত্তরাধিকারী বলে ঘোষণা করা হয়নি। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, তার বয়স অনেক কম এবং তিনি অনভিজ্ঞ। ফলে তার পরিবর্তে তার সৎভাই আবদুল্লাহ সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি ২০০৪ সালে প্রিন্স হামজার যুবরাজ খেতাব বাতিল করেন।
গত শনিবার হামজা ভিডিও বার্তায় তাঁকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলে জানানোর পর দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী আয়মান সাফাদি দাবি করেছেন, প্রিন্স হামজা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
হামজার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে এক সংবাদ সম্মেলনে জর্ডানের উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রিন্স হামজা ‘বিদেশি শক্তির’ সঙ্গে মিলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
উপ-প্রধানমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেন, প্রিন্স হামজা সরকারের বিরুদ্ধে উপজাতীয় নেতাদের একাট্টা করার চেষ্টা করছিলেন। এ ব্যাপারে অনেক দিন ধরেই তদন্ত চলছিল এবং ব্যাপারটি আদালতে তোলা হবে বলেও সাফাদি জানান।
এর আগে প্রিন্স হামজার মা ব্রিটিশ বংশোদ্ভুত রানি নূর এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘অসৎ অপপ্রচারের শিকার সবাই ন্যায়বিচার পাবে এবং সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে’—তিনি সে প্রার্থনাই করছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, সম্প্রতি প্রিন্স হামজা কয়েকজন আদিবাসী নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন, যাদের কয়েকজনের কাছ থেকে তিনি সমর্থন পেয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রিন্স হামজা অবশ্য কোনো রকম অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ ছিলেন না।