সৌদি এয়ারলাইনসের আশ্বাস, রোববার ফ্লাইট যেতে পারে
আটকেপড়া সৌদিপ্রবাসী যাত্রীদের জন্য ফ্লাইট পরিচালনার আশ্বাস দিয়েছে সৌদি এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ। সৌদিপ্রবাসীদের বিক্ষোভের মুখে আজ শনিবার বিকেলে পরে কর্তৃপক্ষ এই আশ্বাস দেয়।
হোটেল সোনারগাঁয়ে সৌদিয়া কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক (বুকিং অ্যান্ড সেলস) জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি আগামীকাল থেকে ফ্লাইট দেওয়ার। আগামীকাল সন্ধ্যা ৭টায়।’
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে আট দিনের কঠোর বিধিনিষেধ চলছে দেশে। এই লকডাউনের মধ্যে প্রবাসীকর্মীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে বিশেষ ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। শনিবার থেকে এই কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই কার্যক্রম প্রথম দিনেই মুখ থুবড়ে পড়েছে। আজ শনিবার সাতটি বিশেষ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
অবতরণের অনুমতি না পাওয়ায় বাতিল হওয়া বিমানের রিয়াদগামী ফ্লাইটের শেষ পর্যন্ত অনুমতি মিলেছে। শনিবার দিবাগত রাত ৩টায় ছেড়ে যাবে ফ্লাইটটি। এদিকে, ফ্লাইট বাতিলের তথ্য আগাম না জানানোয় শাহজালাল বিমানবন্দরে এসে যাত্রীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
জীবিকার তাগিদে বিশেষ ফ্লাইট শুরু হওয়ার খবরে টিকেট সংগ্রহ, করোনা পরীক্ষা, গাড়ি ভাড়া করে লকডাউনের মধ্যে নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বিমানবন্দরে এসে জানতে পারেন ফ্লাইট বাতিল। আগাম কোনো তথ্য না জানানোয় যাত্রীদের ক্লান্তি আর ভোগান্তি তখন চরমে। পরে তা রূপ নেয় বিক্ষোভে।
শনিবার ভোরের রিয়াদগামী ফ্লাইট অবতরণের অনুমতি না পাওয়া এবং দাম্মাম ও দুবাইয়ের দুটি ফ্লাইটে পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় ফ্লাইটগুলো বাতিল করে বিমান।
এরপর দুপুর থেকে বিশেষ ফ্লাইট বাতিলের খবরে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সৌদি এয়ারলাইনসের কাউন্টারের সামনে বিক্ষোভ করেন যাত্রীরা। বিশেষ করে সৌদি এয়ারলাইনসের যাত্রীরা সেখানে ভিড় করেন।
জানা গেছে, যাত্রীদের বেশির ভাগই সৌদি আরবে অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে কর্মরত। সৌদিতে ফেরার জন্য তাঁরা বিভিন্ন তারিখে টিকেট কেটে রেখেছিলেন। ফ্লাইটের দিন পার হয়ে যাওয়ায় ও ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসার কারণে তাঁরা বিক্ষোভ করেন।
নোয়াখালী থেকে আগত সৌদিপ্রবাসী মো. ফিরোজ বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি ফ্লাইট কখন ছাড়বে সে বিষয় জানতে। কিন্তু সৌদি এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করতে পারছি না। ১০ হাজার টাকা খরচ করে আমি ঢাকায় এসেছি। রোববার রাত ১২টায় আমার ফ্লাইট। আমি এখনও জানি না যে, আমি সৌদিতে যেতে পারব কি না। আমার ভিসার মেয়াদ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আমি যদি সময়মতো না যেতে পারি তাহলে আমার ভিসা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাবে। এ পরিস্থিতিতে আমি সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
এর আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কারওয়ান বাজার এলাকার প্রধান সড়ক অবরোধ করেন প্রবাসীরা। এ সময় তাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যায়নি। প্রবাসীদের সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সরকার প্রবাসীকর্মীদের বিদেশে যাওয়ার জন্য শনিবার সকাল ৬টা থেকে থেকে পাঁচটি দেশে ফ্লাইট চালুর অনুমতি দেয়। এই পাঁচটি দেশ হচ্ছে– সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর। শুধু প্রবাসীকর্মীরা এসব ফ্লাইটে যেতে পারবেন। আর দেশে আসলে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে প্রবাসী কর্মীদের।
পাঁচ দেশে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ১২টি এয়ারলাইনসকে অনুমতি দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এই ১২টি এয়ারলাইনস হচ্ছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস, ওমান এয়ার, সালাম এয়ার, কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস, ইতিহাদ, এয়ার অ্যারবিয়া, এয়ার অ্যারাবিয়া আবুধাবি, ফ্লাই দুবাই ও সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস।