ঘুম কেন আসে না?
অনেকেই ঘুমের সমস্যায় ভোগেন। রাতে বিছানায় শোয়ার পর ছটফট করতে থাকেন। কিন্তু কোনোভাবেই ঘুম আসে না। ঘুম না আসার কারণ কী?
এনটিভির ‘এখন যৌবন যার’ আয়োজনে এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ খান।
ডা. নিয়াজ মুহাম্মদ খান বলেন, ঘুম না আসার সমস্যাগুলোকে যদি আমরা চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় দেখতে চাই, তাহলে দেখতে পারব যে আসলে প্রাইমারি ইনসমনিয়া বা প্রাথমিকভাবে যেসব ঘুমের সমস্যা হয়, সেগুলোতে আসলে বিশেষভাবে কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না, যেটা হচ্ছে ঘুমের মোট সমস্যার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। এ ছাড়া বিভিন্ন পারিবারিক-সামাজিক সমস্যার জন্য ঘুম না আসতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন মানসিক সমস্যা, যেমন—বিষণ্ণতা, উদ্বেগ, মানসিক চাপের কারণে ঘুম না আসতে পারে। আর কিছু সমস্যা দেখা যায় আমাদের তরুণ-তরুণীদের মধ্যে, সেটা হচ্ছে, তাদের কিছু ড্রাগস... বিভিন্ন রকম ইলিগ্যাল ড্রাগস নেওয়ার কারণেও ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই যে ঘুমের সমস্যাগুলো দেখা দেয়, তার জন্য অনেক তরুণ-তরুণীই দেখা যায় নিজে থেকে আসলে কী করবে বুঝতে পারে না...
একটি কেস স্টাডি অবতারণার পর তিনি বলেন, এই যে ঘুম না আসার বিষয়টা, এটাকে যখন আমরা নিজেরাই সমাধান করতে যাই, তখন দেখা যায় ওষুধের প্রতি নির্ভরশীলতা চলে আসে। কোনোমতেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে নিজে নিজে ঘুমের সমস্যা সমাধান করতে যাবেন না। কারণ, এটি আপনার জন্য আরেকটি বিপদ ডেকে আনতে পারে।
তাহলে ওষুধ ছাড়া আমাদের করণীয় কী, এ প্রশ্নের জবাবে ডা. নিয়াজ মুহাম্মদ খান বলেন, আমরা যেটাকে বলি স্লিপ হাইজিন বা ঘুমের স্বাস্থ্যসম্মত বিধি। এর মধ্যে প্রথমেই যেটা আছে, সেটা হলো ঘুমের জায়গাটা যেন আরামদায়ক হয়, পরিচিত হয়, একটু যেন শব্দবিহীন জায়গা হয় এবং সেখানে যেন একটু অন্ধকার থাকে। অন্ধকারটা ঘুমের ভাব এনে দেবে। এ ছাড়া যে বিষয়টা, ঘুমানোর আগে অবশ্যই মোবাইল ফোন, ট্যাব বা ল্যাপটপ বা কম্পিউটার, যেটাতে ফ্লিকারিং লাইট আসে, সেটা অবশ্যই ব্যবহার করব না। ঘুমের অন্তত দুই-তিন ঘণ্টা আগে থেকে ব্যবহার করলে ঘুম খুব ব্যাহত হয় এবং আমাদের ঘুমের সাইকেলটা বিঘ্ন ঘটে। এ ছাড়া আমরা যেটা করব, সেটা হচ্ছে রেগুলার ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ। একটা জিনিস আমরা এড়িয়ে চলব, সেটা হচ্ছে চা-কফি বা ক্যাফেইন-জাতীয় জিনিস, বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের জন্য একটা কথা বলব, সেটা হচ্ছে যাঁরা স্মোকিংয়ে অভ্যস্ত, তাঁরা স্মোকিংটা অবশ্যই ছেড়ে দেবেন। তাতে অবশ্যই ঘুমের ইমপ্রুভ হবে, ভালো হবে। ঘুমের ওষুধ ঘুমের সমস্যার সমাধান নয়।