আমার মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না : তিন্নি
দুই বছর বিরতির পর আবারো অভিনয়ে ফিরেছেন জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী তিন্নি। গেল ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর ‘একই বৃত্তে’ নাটকের শুটিং করেছিলেন তিনি। গতকাল ঢাকার ধানমণ্ডির রবীন্দ্রসরোবরে এই নাটকের একটি গানের দৃশ্যে অংশ নেন তিনি। শুটিংয়ের অবসরে গতকাল রোববার এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে তিন্নি তাঁর ফেরার গল্প, বিয়ের খবর গোপন রাখার কারণ ও আগামীর স্বপ্ন নিয়ে কথা বলেছেন।
প্রশ্ন : নাটকে আপনার লম্বা বিরতি নেওয়ার কারণ কী ছিল?
উত্তর : আমি জানি না, আমি মডেল-অভিনেত্রী হতে পেরেছি কি না। আমি এখনো মডেল সাদিয়া ইসলাম মৌর অনেক বড় ভক্ত। আর কাজে না ফেরার একটাই কারণ, আমার মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না। অনেক কষ্টে ছিলাম। অনেকে আমাকে কাজে ফিরতে বলেছেন; কিন্তু আমি মানসিক শক্তি পাইনি। আমি অশেষ ধন্যবাদ দিতে চাই আমার মা ও ‘একই বৃত্তে’ নাটকের পরিচালক সুজন শাহরিয়ারকে। কারণ, তাঁদের জন্যই আমি আবারো নাটকে ফিরেছি। আর একটা কথা বলতে চাই, এই লম্বা বিরতির সময় আমি যে খুব ভালো ছিলাম, বিষয়টি মোটেও সে রকম নয়। আমি ভালো ছিলাম না। ভক্তদের সব সময় মিস করেছি।
প্রশ্ন : অনেক দিন পর নাটকের জন্য ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন। কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা?
উত্তর : আমি স্বাভাবিক ছিলাম। শট দেওয়ার সময় দেখি, আমার সব কাছের মানুষ এখানে আছেন। ক্যামেরাম্যান, মেকআপ, আটির্স্ট থেকে শুরু করে সব আমার পরিচিত মুখ। তখন খুব ভালো লেগেছিল। আর অবাক ব্যাপার হলো, আমার প্রথম শট এক টেকে ওকে হয়েছিল। পরিচালক এটা দেখে খুব খুশি হয়েছিলেন। আর ইউনিটের সবার আনন্দ দেখে আমার তখন মনে হয়েছিল, ইশ! আমি কত সেলফিশ। আমার জমানো দুঃখের জন্য এই সুখের জায়গা আমি ছেড়ে দিয়েছি। আমার মা শিক্ষিকা ছিলেন। এই নাটকের শুটিংয়ের কিছু দৃশ্য আমার মায়ের স্কুলেও ধারণ করা হয়েছে। আমি একসময় মায়ের সঙ্গে এসে স্কুলে টিফিন খেতাম। আর আমি অভিনেত্রী হয়ে এই স্কুলে শুটিং করেছি। এ জন্য আমি নিজেও গর্ববোধ করছিলাম।
প্রশ্ন : শুটিংয়ে ফেরার মূল অনুপ্রেরণা কার কাছ থেকে পেয়েছিলেন?
উত্তর : আমার স্বামী আদনান হুদা সাদের কাছ থেকে। আমাকে শুটিংয়ে ফেরার মানসিক শক্তি আদনান দিয়েছে। আজো আমি শুটিংয়ে আসতে চাইছিলাম না। আদনান ঘুম থেকে তুলে শুটিংস্পটে আমাকে নিয়ে এসেছে।
প্রশ্ন : ২০১৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেছেন। বিয়ের খবর গোপন রাখার কারণ কী ছিল?
উত্তর : আসলে আদনান ও আমি ভালোবেসে গোপনে বিয়ে করেছিলাম। আমরা দুজনই খুব আশঙ্কায় ছিলাম, আদনানের পরিবার আমাদের বিয়ে মেনে নেবে কি না। তাই বিয়ের খবর প্রকাশ করতে চাইনি। পরে আদনানের পরিবার আমাদের ভালোভাবে মেনে নিয়েছিল। তাই বিয়ের খবর গোপন রাখার আর প্রয়োজন বোধ করিনি।
প্রশ্ন : আপনি কাজে বিরতি নিলেও ফেসবুকে ছবি ও স্ট্যাটাস দিতেন। কিন্তু আপনাকে অনলাইনে কখনো দেখা যায়নি কেন?
উত্তর : আমি আসলে ভয়ে অনলাইনে আসতাম না। কারণ, অনলাইনে এলে আমার ভক্তরা বলত, ‘আপু, ওয়েলকাম ব্যাক।’ আমি তো তখন স্ক্রিনে ব্যাক করিনি। তবুও আমার ছবি, স্ট্যাটাস দেখে ভ্ক্তরা খুব উচ্ছ্বসিত হতেন। আমার যে এত ফ্যান! আমি এটা দেখেই লজ্জা পেতাম। কারণ, এখন তো অনেক সুন্দর সুন্দর মেয়ে মিডিয়ায় কাজ করছে। আর আমি তো কত পুরোনো মডেল!
প্রশ্ন : নতুনদের কাজ কি আপনি দেখেছেন?
উত্তর : হ্যাঁ, আমি নিয়মিত টিভি দেখি। সারিকা তো আমার জান ছিল, এখনো আছে। বিন্দুকেও ভালো লাগত। ওরা কেউই এখন আর কাজ করে না। সবাইকে আমি অনেক মিস করি। আর নতুনদের মধ্যে মেহজাবীনের কাজ আমার অনেক ভালো লাগে। মেহজাবীন এখন আমার প্রিয় মডেল।
প্রশ্ন : এখন কি নিয়মিত আপনাকে দর্শক দেখতে পাবেন?
উত্তর : হ্যাঁ, নতুন ধারাবাহিক নাটকের কাজ এই মাসের শেষের দিকে শুরু করব। নাটকের নাম ‘আমার আমি’। এ ছাড়া চলচ্চিত্রেও কাজ করার কথাবার্তা চলছে।