স্বাস্থ্যবিধি মেনে শরীয়তপুরে সুশৃঙ্খল গরুর হাট
কঠোর লকডাউনের মধ্যে যেখানে মানুষদের নিয়ন্ত্রণ করতেই হিমসিম খাচ্ছে, ঠিক সেই সময় শরীয়তপুরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরুর হাট আয়োজন করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনদীপ ঘরাই। যার নাম মনোহর বাজার গো-হাট। সপ্তাহের সোমবার এই হাট বসে।
আজ সোমবার দুপুরে হাট পরিদর্শনে আসেন ৯৯ কম্পোজিট বিগ্রেডের বিগ্রেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান, পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুজ্জামান, সিভিল সার্জন এসএম আব্দুল্লাহ আল মুরাদ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মাঠে ফাঁকা ফাঁকা করে গরু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বিক্রেতারা। একটি গরু বিক্রি হচ্ছে আরেকটি গরু আসছে। সবার মুখে মাস্ক। হাট ব্যবস্থাপনা থেকে দেওয়া হচ্ছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। গরু নিয়ে ঢুকতে হলে দেওয়া হচ্ছে রিসিট। আবার বিক্রি হলে সারিবদ্ধভাবে হাট থেকে গরু নিয়ে বের হচ্ছে। একটি বিক্রি করলে আরেকটি হাটে ঢুকছে। বের হতে সাহায্য করছে স্কাউট, পুলিশ ও আনসার বাহিনী। পুরো এলাকা একটি নিয়মের মধ্যে চলে এসেছে।
গরু নিয়ে আসা নাগেরপাড়ায় আলি আহমেদ বলেন, ‘আমার জীবনে এই প্রথম হাটে এত সুন্দর শৃঙ্খলা দেখতে পেলাম। গরু নিয়ে দালালরা হট্টগোল করতে পারে না। আমরা যা পাই তা দিয়ে বিক্রি করি। সম্পূর্ণ টাকাটা আমরা পাচ্ছি। মাস্কপরা অনেক কষ্ট, দম ফেটে যায়। তারপরও এই হাটে এসে মাস্ক পরে আছি। খারাপ লাগে তবে উপকার বেশি। ঢোকার আগে হাট কর্তৃপক্ষ হাত সাবান দিয়ে ধুয়েছে। মাস্ক দিয়েছে।’
ইউএনও মনদীপ ঘরাই বলেন, ‘ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের প্রতিটি জায়গায় হাট বসেছে। দেশে যেই হারে করোনা সংক্রমণ বাড়তেছে তাই হাট করার জন্য সরকারি বিধিনিষেধ মেনে এই চেষ্টামাত্র। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা প্রতিটি হাটে নজরদারি রাখছি। যাতে করে ক্রেতা ও বিক্রেতা দুই জনই সামাজিক দূরত্ব মানে।’
জেলা পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘প্রথম থেকেই মানুষকে সচেতন করার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল গরুর হাটে জনসমাগম কমানোর। সেই কাজে আজ সফল।’
জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান বলেন, ‘শরীয়তপুরে করোনা আক্রান্তের হার বাড়ছে। সেই মোতাবেক প্রসাশন সরকারি বিধিনিষেধ মানাতে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অসহায় ও দরিদ্র মানুষের ঘরে গিয়ে খাদ্যসামগ্রী সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’
৯৯ কম্পোজিট বিগ্রেডের বিগ্রেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান বলেন, ‘মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার-ভিডিপি সমন্বিত হয়ে মাঠে কাজ করছে। এতে করে সচেতনতার পাশাপাশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হাত থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারে। জেলার সবচেয়ে বড় গরুর হাট যেখানে সবস্তরের মানুষ এসে উপস্থিত হয়। আর এই জায়গায় মানুষের যেভাবে চলাচল দেখছি এটি সম্ভব হয়েছে সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও সহযোগিতার কারণে।’