সৌদি বাদশাহকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন যুবরাজ!
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বিষাক্ত আংটি ব্যবহার করে বাদশাহ আব্দুল্লাহকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন দেশটির সাবেক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্রের সিবিএস নিউজের ‘সিক্সটি মিনিটস’ টকশোতে এমন দাবি করেছেন সৌদি আরবের সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা সাদ আল-জাবরি।
গত রোববার প্রচারিত টকশোয় আল-জাবরি ২০১৪ সালের একটি ঘটনার বর্ণনা দেন যেখানে মোহাম্মদ বিন সালমান এবং তাঁর চাচাতো ভাই মোহাম্মদ বিন নায়েফ ছিলেন। নায়েফ পরবর্তীতে সৌদি আরবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হন। সেসময় নায়েফকে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, ‘আমি বাদশাহ আব্দুল্লাহকে হত্যা করতে চাই। রাশিয়া থেকে একটি বিষাক্ত আংটি আনছি, যেটি পরে আব্দুল্লাহর সঙ্গে হাত মেলাতে পারলেই যথেষ্ট হবে। তিনি এটা বাগাড়ম্বর করতে বলেছিলেন কিনা তা জানি না, তবে তিনি বলেছিলেন এবং আমরা এটাকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছিলাম।’
২০১৫ সালের জানুয়ারিতে বর্তমান বাদশাহ সালমান সৌদি সিংহাসনে বসেন। ৯০ বছর বয়সে বাদশাহ আব্দুল্লাহর মৃত্যু হলে মোহাম্মদ বিন সালমানের বাবা বর্তমান বাদশাহ ক্ষমতায় আসীন হন।
বর্তমানে কানাডায় স্বেচ্ছায় প্রবাস যাপনকারী সৌদি আরবের গোয়েন্দা বিভাগের দ্বিতীয় শীর্ষস্থানীয় পদে নিযুক্ত এই কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিন নায়েফের সঙ্গে ঘনিষ্ট ছিলেন। মোহাম্মদ বিন সালমান ক্রাউন প্রিন্স হওয়ার পর ক্ষমতার টানাপোড়েনে মোহাম্মদ বিন নায়েফ কোনঠাসা হয়ে পড়েন। ২০১৭ সালের জুন থেকে তিনি গৃহবন্দি রয়েছেন।
টিভি সাক্ষাৎকারে সাদ আল-জাবরি আরও বলেন, ‘আমাকে হত্যা করতে ২০১৮ সালে কানাডায় হিট স্কোয়াড পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিলেন মোহাম্মদ বিন সালমান। এ ছাড়া আমার দুই সন্তান সারাহ ও ওমরকে বর্তমানে সৌদি আরবে জেলবন্দি করে রাখা হয়েছে।’
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ২০১৮ সালের অক্টোবরে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার ঘটনার পরই আল-জাবরিকে কানাডায় হত্যার হুমকি পাঠানো হয়। আল-জাবরিকে হত্যার হুমকি নিয়ে সেসময় সংবাদমাধ্যমে খবরও বের হয়।
সিবিএসের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সৌদি আরবের সরকারের কাছে বক্তব্য চাওয়া হলে তাতে রাজি হয়নি সৌদি সরকার। তবে ওয়াশিংটনের সৌদি দূতাবাস সাদ আল-জাবরিকে ‘অবিশ্বস্ত’ সাবেক সরকারি কর্মকর্তা আখ্যায়িত করেছে।
সৌদি আরবের সরকারি মালিকানাধীন কয়েকটি কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা কর্তৃপক্ষের নিকট সাদ আল-জাবরির বিরুদ্ধে অর্থচুরির অভিযোগ দিয়েছে। এসব কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের হাতে।
সৌদি আরবে জেলবন্দি দুই সন্তানের মুক্তির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চান সাদ আল-জাবরি।