ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নে ফিলিপাইনের মেয়ে জেসমিন আক্তার ইউপি সদস্য হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত (১, ২ ও ৩ নম্বর) ওয়ার্ডে মাইক প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জেসমিন পান চার হাজার ৪৯৬ ভোট। তার নিকটতম অপর নারী প্রতিদ্বন্দ্বী শিমু আক্তার বক প্রতীকে পেয়েছেন  এক হাজার ৮৩৭ ভোট।

জানা যায়, ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দবরদস্তা গ্রামের আব্দুস সামাদ মণ্ডলের ছেলে জুলহাস। ১৯৯৮ সালে সিঙ্গাপুরের একটি কোম্পানিতে চাকরি করার সময় সহকর্মী জিন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চাকরি ছেড়ে জুলহাস বাংলাদেশ ফিরে আসেন আর জিন ক্যাটামিনও তার দেশে  চলে যান। কিন্তু ফোনে তাদের যোগাযোগ ছিল। ২০১০ সালে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের আগে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করলে জিন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকার নতুন নাম হয় জেসমিন আক্তার জুলহাস। বাংলাদেশে আসার পর তিনি এ দেশের নাগরিকত্ব পান। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

বিজয়ী হওয়ার পর জেসমিন গ্রামের রাস্তায় বেরুলেই উৎসুক মানুষ তাকে দেখতে ভিড় করছেন। স্বামী জুলহাস মিয়া দোভাষী হিসেবে সাধারণ মানুষের অনুভুতি ইংরেজিতে বুঝিয়ে দিচ্ছেন জেসমিনকে।

জুলহাস তাঁর স্ত্রী সম্পর্কে জানান, জেসমিন মানুষকে নানাভাবে উপকার করার চেষ্টা করেন। তার ভেতর নেতৃত্বের গুণ রয়েছে। তাই এলাকাবাসীর অনুরোধে মেম্বার প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তার স্ত্রী।

নব নির্বাচিত ইউপি সদস্য জেসমিন আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী জুলহাসের জন্য নিজের দেশ ও বাবা-মাকে ছেড়ে বাংলাদেশ ছুটে আসি। এ দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। এলাকার গরিব-দুখী মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। এজন্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা আসনে মেম্বার পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। মানুষ ভালোবেসে আমাকে বিজয়ী করেছে। মানুষের ভালোবাসাকে কাজে লাগিয়ে তাদের সেবা করতে চাই।’

জেসমিন পড়াশোনা করেছেন ফিলিপাইনের নামি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগে। গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্নের পর সিঙ্গাপুরে চাকরি করতে গিয়ে পরিচয় হয় বাংলাদেশি তরুণ জুলহাস উদ্দিনের সঙ্গে। পরিচয় থেকে প্রেম, এরপর বিয়ে। তারপর থেকে এদেশেরই একজন হয়ে উঠেছেন।