কুলিয়ারচরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়ি-প্রতিষ্ঠানে হামলার অভিযোগ
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়েছে বলে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের অভিযোগ, গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এস এম আজিজ উল্যাহর ৪০০ থেকে ৫০০ জন সমর্থক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাসুদুর রহমান মুছার ফরিদপুর মাজার এলাকার সমর্থকদের বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যায়।
ফরিদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলামের অভিযোগ, নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন না করায় তাঁকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছিল। গতকাল শুক্রবারও তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। রাত ১০টার দিকে ২০ থেকে ২৫ জন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় হামলাকারীরা ঘরে থাকা নগদ অর্থ এবং কয়েক ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নেয়। ঘটনার সময় তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে নিজ বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র রাত্রীযাপন করায় প্রাণে বেঁচে যান বলে দাবি করেন। এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন তিনি।
নৌ-বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বুলবুল ইসলাম ভূঁইয়ার অভিযোগ, তিনি চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক হওয়ায় রাতে তাঁর বাড়িতে হামলা চালিয়েছে নৌকার সমর্থকেরা। এ সময় তাঁর বাড়ি ও গ্যারেজে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। হামলার সময় তিনি ঘরে তালা লাগিয়ে লুকিয়ে থাকেন বলে দাবি করেছেন।
মো. রহেম আলী খান নামের এক ব্যক্তির অভিযোগ, স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদুর রহমান মুছা তাঁর আত্মীয় হওয়ায় তাঁর চাচা শিল্পপতি মো. ফজলুর রহমানের বাড়ি ও খামারে ৪০০ থেকে ৫০০ লোক হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। হামলার সময় তাঁরা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন।
এ ছাড়াও মাজার এলাকার দুটি মার্কেটের বেশ কয়েকটি দোকান, মাজার বাজারের সরকারি কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের অফিসে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এস এম আজিজ উল্যাহ দাবি করে বলেন, ‘আমার সমর্থকেরা এই ভাঙচুর চালায়নি। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য তারা নিজেরাই ভাঙচুর চালিয়ে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করেছে।’
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ভাঙচুরের ঘটনার খবর শুনে গতকাল রাতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি কয়েকটি বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি।’
চলমান ইউপি নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে আগামী ২৮ নভেম্বর রোববার কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের ছয় ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ফরিদপুর ইউপির চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন ওই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম আজিজ উল্যাহ। অন্যদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চশমা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন মো. মাসুদুর রহমান মুছা। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।