গোপালগঞ্জে ইজিবাইক চালককে হত্যায় পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড
গোপালগঞ্জে ইজিবাইক ছিনতাই করে চালক জাহিদুল ইসলাম বাবুকে (১৬) হত্যা মামলায় পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত বিচার মো. আব্বাস উদ্দীন এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়ার নতুন চন গ্রামের খালিদ ফকির, মো. বিপুল ফকির, রাজ্জাক মোল্লা, জেলার কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের ব্যাসপুর গ্রামের মো. হাসান শেখ ও নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার চাচাই গ্রামের মো. ফসিয়ার মোল্লা। আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর খালিদ ফকির তার ব্যবহৃত মোবাইল থেকে ফোন করে জাহিদুল ইসলাম বাবুকে গোপালগঞ্জ শহরের কাঁচাবাজার সংলগ্ন মেইন রোডে আসতে বলেন। পরে ইজিবাইক চালক জাহিদুল ইসলাম বাবু সদর উপজেলার গোলাবাড়ীয়া গ্রামের বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে কাঁচাবাজারে আসেন। এরপর থেকে চালক জাহিদুল ইসলাম নিখোঁজ ছিলেন। ওই বছরের বছরের ২ অক্টোবর পুলিশ ঢাকা খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভুলবাড়ীয়া ব্রিজের সড়কের পাশ থেকে বাবুর লাশ উদ্ধার করে। ওইদিন জাহিদুল ইসলাম বাবুর বাবা মো. নজরুল মোল্লা বাদী হয়ে খালিদ ফকির ও রাজ্জাক মোল্লাকে আসামি করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের ব্যাসপুর গ্রামের মো. হাসান শেখের বাড়ি থেকে পুলিশ ইজিবাইকটি জব্দ করে।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোপালগঞ্জ সদর থানার এসআই আজিজুর রহমান বিগত ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর আদালতে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সাক্ষ্যপ্রমাণ গ্রহণ ও দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত ওই পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করে মৃত্যুদণ্ড ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন।
সরকারি সহকারী কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মো. শহিদুজ্জামান খান ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মো. ফজলুল রহমান খান মামলাটি পরিচালনা করেন।
মামলার বাদী ও নিহতের বাবা নজরুল মোল্লা বলেন, ‘আমার ছেলেকে এই পাঁচজনে হত্যা করেছে। দীর্ঘ দিন পর আমি ছেলে হত্যার বিচার পেয়েছি। এ রায়ে আমি ও আমার পরিবার খুশি। আমাদের দাবি দ্রুত এ রায় কার্যকর করা হোক। যাতে কেউ আর এ ধরনের কাজ করতে সাহস না পায় এবং কেউ যেন তার সন্তানকে এভাবে না হারায়।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. মোক্তার আলী বলেছেন, এ রায়ের মাধ্যমে এ পরিবারটি ন্যায্য বিচার পেয়েছে। আশাকরি উচ্চ আদালত এ রায় বহাল থাকবে এবং রায় কার্যকর হবে।