স্বাধীন ভাবনা
সকল সাম্প্রদায়িকতা ও বৈষম্য দূর হোক
জঙ্গিবাদের নামে যা শুরু হয়েছে, সেটা তো কেবল দেশীয় প্রেক্ষাপটে দেখলে চলবে না। দেখতে হবে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটেও। তথাকথিত বিশ্বায়ন এই জঙ্গিবাদের সৃষ্টি করেছে। জঙ্গিবাদকে পোষণ করছে, আবার বিশ্বায়নের ধারক মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী তারা বলছে, জঙ্গিবাদের তারা বিরোধী। পুরো জিনিসটার মধ্যে একটা ভণ্ডামি বিদ্যমান। যা-ই হোক, এর ধাক্কা আমাদের পোহাতে হচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদ আমাদের এখানে আইএস আছে বলে বারবার প্রচার করে এখানে ঢোকার একটা প্রয়াস নিচ্ছে।
এই জিনিসটা আমাদের অন্তত রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ ঠেকানোর চেষ্টা করছে, এখন পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখছে। স্বাধীনতার মাসে আমার কেবল বারবারই মনে হচ্ছে যে ২৬ মার্চে আমরা স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম এবং স্বাধীনতা লাভও করেছিলাম। কিন্তু আমাদের সেই স্বাধীনতাকে যারা বঙ্গোপসাগরে ডুবিয়ে দিতে চেয়েছিল, সেই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ আমাদের স্বাধীনতার পর থেকেই নতুনভাবে তৎপর হয়েছে। সেই তৎপরতা সম্পর্কে আমাদের সচেতন হতে হবে। এবং সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চিন্তা-চেতনাকে জাগ্রত রেখে আমাদের স্বাধীনতা দিবস পালনে যোগ দিতে হবে।
সেই সঙ্গে মনে রাখতে হবে, আমাদের স্বাধীনতার প্রাপ্তিও অনেক এবং সে প্রাপ্তি আমাদের যাঁরা ঘটিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা হচ্ছেন আমাদের সাধারণ মানুষ, সাধারণ জনগণ। বিশেষ করে কৃষক। কৃষকদের হাত দিয়েই আমাদের স্বাধীনতা সার্থক হয়ে উঠেছে। কিন্তু সেই স্বাধীনতার ফল কৃষকরা ভোগ করতে পারছেন না। দারিদ্র্য বিমোচন যেভাবে হওয়া উচিত ছিল, সেভাবে হচ্ছে না। যেভাবে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে, সেই বৈষম্য দূর করতে না পারলে যথার্থ অর্থে স্বাধীনতার প্রাপ্তি আমাদের ঘরে ঘরে পৌঁছবে না। লুটপাটসহ নানা অরাজকতার বিরুদ্ধে আজকে আমাদের নতুন করে আন্দোলন-সংগ্রামে নামতে হবে। সেই সংগ্রামের মধ্য দিয়েই স্বাধীনতাকে যথার্থ অর্থে সার্থক করে তোলা যাবে বলে আমি মনে করি।
আগামীর বাংলাদেশ হবে মহান স্বাধীনতার চেতনার বাংলাদেশ। যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, যে স্বপ্ন নিয়ে এ দেশকে স্বাধীন করেছিলাম, সেই বাংলাদেশকে দেখতে চাই। যেখানে কোনো সাম্প্রদায়িকতা থাকবে না, কোনো বৈষম্য থাকবে না, দেশের সকল মানুষ তার সঠিক নাগরিক সুবিধা ভোগ করবে। আমি তেমনি একটা সোনার বাংলাদেশ চাই।
লেখক : শিক্ষাবিদ