বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক
প্রভু নহ প্রতিবেশী
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারতসফর কতটা সফল হইয়াছে তাহার একটা দিক-নির্দেশক বা পরিমাপক আকারে ভারতের পররাষ্ট্র (বা বিদেশ) মন্ত্রণালয় একপ্রস্ত মনোজ্ঞ ছবি রাষ্ট্র করিয়াছেন। ছবিতে দেখা যাইতেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন হায়দ্রাবাদ হাউসে শনিবার (মোতাবেক ৮ এপ্রিল ২০১৭) শীর্ষ বৈঠকের পর খুলনা-কলিকাতা ট্রেন উদ্বোধনের আচারানুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্রনাথ মোদির সঙ্গে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ছবিটি সত্যি মনোজ্ঞ হইয়াছে। ইহাতে দেখা যাইতেছে, নরেন্দ্র মোদির ডানপাশে শেখ হাসিনা আর বামপাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেখিবামাত্রই আমি কি যেন মনে করিতে বাধ্য হইলাম। আজি হইতে প্রায় চব্বিশ বছর আগের একটি ছবির কথা মনে পড়িল।
ইংরেজি ১৯৯৩ সনের কোন একদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতিভবন শ্বেত প্রাসাদের সবুজ ঘাসবাগানে প্রতাপশালী রাষ্ট্র এসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইজ্জাক রবিন ও দুর্বল ফিলিস্তিন মুক্তি-সংগ্রামের সভাপতি ইয়াসের আরাফাতের মধ্যস্থলে দাঁড়াইয়াছিলেন রাষ্ট্রপতি উইলিয়াম ক্লিনটন। তাঁহার শাদা হাত আর দুই শাদা-কালো নেতার ঘাড়ে। রাষ্ট্রপতি ক্লিনটনের মধ্যস্থতায় এসরায়েল রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রযশপ্রার্থী ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি ঘোষণার জন্যই সেদিন তিন নেতার ঐ ছবি তোলা হইয়াছিল।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শেখ হাসিনার সমান মর্যাদার আসনে বা জায়গায় (বামে আর ডানে কি আসে যায়) দাঁড় করাইয়া ভারত সরকার কি চতুর কাজই না করিয়া সারিল! নরেন্দ্র মোদিকে আমার কেবল মনে হইতেছিল উইলিয়াম জেফারসন ক্লিনটনের প্রতিচ্ছবি। বাংলাদেশকে অগত্যা ফিলিস্তিনের জায়গায় দেখা ছাড়া উপায় কি! ইহাকেই কি বলে কপাল গুণ!
পত্রিকান্তরে পড়িলাম, শনিবারের বৈঠকে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলিয়াছেন, তিস্তার পানি দিতে না পারিলেও তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে রাজি আছেন। পত্রিকার পাঠ অনুসারে তিনি বলিয়াছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে আমাদের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ আছে। যেহেতু অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের বিদ্যুতের প্রয়োজন, তাই চাইলে আমরা তাদের বিদ্যুৎ দিতে পারি।’ এই প্রস্তাবের নির্গলিতার্থ কি? বানান না করিয়াই বলা চলে—আপাতত তিস্তার পানি দূর অস্ত!
ইংরেজি ২০১১ সালের গোড়ার দিকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা ছিল ইউ.পি.এ. বা প্রগতিশীল ঐক্য মোর্চার হাতে। এই মোর্চার নেতা মনমোহন সিংহ প্রধানমন্ত্রীর আসন হইতে ডাকিয়া ঢাকা আসিবার পথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে লইতে পারেন নাই। অতয়েব তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন হয় নাই। আজ সাত বছরের মাথায় মমতা দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছিয়াছেন। তাহাতে অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হইয়াছে মনে করিবার মতন কোন ঘটনা ঘটে নাই।
ভারতের সংবিধান ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে অনেক ক্ষমতা ন্যস্ত করিয়াছে। তাহার মধ্যে আছে আন্তর্জাতিক চুক্তি প্রভৃতি সম্পাদনের ক্ষমতাও। ভারত সরকার যদি স্থির করেন তাহারা বাংলাদেশের সহিত চুক্তি করিবেন না, তো তাহারা সম্পাদন তাহা না করিতেই পারেন। যদি প্রাদেশিক (বা রাজ্য) সরকার বাধা হইয়া থাকে তো তাহার একটা বিহিতও তাহারা করিতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সহিত ভারতের অনেক রাজ্যের এক রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে বসাইবার এই যাত্রা কেন? বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কে হইবেন বা থাকিবেন তাহা ভারতের ইচ্ছার ব্যাপার—এই বার্তা বিনিময় করা না তো! এই তো ‘তোমার সৃষ্টির পথ’!
আর এই সম্মানের বিনিময়ে বাংলাদেশ কি পাইল? প্রশ্নটা আমি জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম আমার শ্রদ্ধেয় বন্ধু শামসেত তাবরেজীর হাজিরায়। বলিয়া রাখা মন্দ নয়, বর্তমানে বাংলাদেশে যে সকল পদ্যকার সশরীরে দিব্য আছেন আমি মন্দমতি তাঁহাদের সকলের শীর্ষদেশে এই কবিকেই রাখিয়াছি। কারণটা একটু পরেই বলিব। আমার আহাজারি শুনিয়া তিনি একটি পদ্য জারি করিয়াছেন। বিনয় করিয়া তিনি নিজেই ইহার জাত নির্ণয় করিয়াছেন ‘পদ্যমত’। তাঁহার সদয় সম্মতিক্রমে পদ্যটি এইখানে হাজির করিতেছি। পদ্যের নাম ‘আ-ছাড়’। কবি কি বলিতে চাহিয়াছেন তাহার বার আনাই বুঝি নাই। যে চারি আনা বুঝিলাম তাহার দুই আনায় বলে ‘আহা, ছাড়িয়া দাও তো!’ আর বাকি দুই আনা অনুসারে, ‘আছাড়টা মারিয়াছ বেশ।’ শুদ্ধ ‘প্রটোকল’ লব্জটির ব্যবহার দেখুন না কেন! যাহাকে বলে ছারখার! দেখা যাইতে পারে কোন অর্থটার বশ হইব আমরা—‘আহা ছাড়ের’ না ‘আছাড়ের’? কবি গাহিতেছেন :
আ-ছাড় ॥ শামসেত তাবরেজী
কিছু ধান নিয়ে যেও বাদলার দিনে
উপাস থেকো না
দেহ চাই কর্ম-অধীন
কত বালবাচ্চা তোমার
আমায় লহ না কেন জিনে
আমি যোগ্য চিরকাল তোমার ক্ষমার
যদিও প্রস্তুত আমার সঙ্গীন
জানি, ধর্মে অত্যাচার হয়, মনেটি রেখো না, প্রিয়ে
নদীতে না হয় নাই পানি
শিরায় তো প্রবাহিত রক্ততরল
পিয়ো তাই ছেলেপুলে নিয়ে।
গুণাহ নাই তৃষ্ণাকালে পান যদি করহ গরল
কত খুশি আনন্দে আজ পুরুষার্থ ছানি—
তাই তো এলাম ছুটে ভেঙ্গে প্রটোকল
তোমার মঙ্গল হোক স্বাধীনতা ডিমে তা দিয়ে।
কবিতাটি পড়িয়া (বলা যায় পড়িবার মধ্যেই) আমি অবাক হইয়াছি। গালে হাত দিয়া খানিক পানির মত ভাবিয়াছি, বাংলাদেশে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কত বিদ্যুতের প্রয়োজন? বিদ্যুত না হইলেও হয়তো আমাদের চলিবে, কিন্তু আমাদের জমি ছাড়া তো চলিবে না। আমরা কোথা হইতে জমিজিরাত আমদানি করিব?
কথা বাড়াইতে চাহিতেছি না। আমার খালিপেটে একটা দুশ্চিন্তা হইতেছে। শুদ্ধ তাহার কথাই বলি। তিস্তা ছাড়াও বাংলাদেশের সহিত ভারতের আরও ৫৩টি আন্তর্জাতিক নদীর ব্যবসায় আছে। এই অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদীমালার বিষয় অর্থাৎ পানির হিস্সা ভাগাভাগির মামলা নিষ্পত্তি করিবার লক্ষ্যেই ১৯৭২ সালে গঠিত হইয়াছিল মিলিত বা যৌথ নদী কমিশন। সেই কমিশনের তৎপরতায় ১৯৯৬ নাগাদ পদ্মা নদীর পানি ভাগাভাগির জন্য একটি ৩০ বছর মেয়াদী চুক্তিও লেখা হইয়াছিল। অনেকদিন বিরতি দিয়া ২০১০ সালে এই কমিশন আরেকবার বৈঠকে বসিয়া স্থির করিয়াছিল অন্তত ১৫ বছরের জন্য তিস্তার পানি ভাগাভাগি করিবার জন্য নতুন একটি চুক্তি করিবে দুই দেশ।
পরন্তু কোথায় সেই চুক্তি? তিস্তার উজানে গাজলডোবায় একটি বড় বাঁধ দিয়া ভারত পানি আটকাইয়াছে। শুদ্ধ তাহাই নহে, তিস্তায় যাহাদের পানি আসিয়া যোগ হয় তেমন ছোট ছোট আরও কিছু উপনদী আছে। ভারত সেখানেও অজস্র বাঁধ বাধিয়াছে। শুদ্ধ কি তাহাই? তিস্তা নদীর উৎপত্তি যেখানে সেই হিমালয়পুত্র সিকিমের স্থানে স্থানেও কমপক্ষে ১৫টি বাঁধ দিয়া বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা হইয়াছে। সমস্যা জটিল হইতে জটিলতর হইতেছে। ১৯৫০ সালে অহম রাজ্যে একবার ভূমিকম্প হইয়াছিল। ঐ ভূমিকম্পের মাত্রা রিকটার যন্ত্রে ৮.৫ পর্যন্ত উঠিয়াছিল। হিমালয়ের সানুদেশ বড়ই কম্পনপ্রবণ।
এক্ষণে আমার অন্য ভয়ের কথাটা বলিয়া এই লেখার তামামশোধ করিব। বাংলাদেশের জনমতের সহিত এই পানির স্রোতের কোথায় জানি একটা নাড়ির সংযোগ রহিয়াছে। ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল তারিখে পরীক্ষামূলকভাবে ৪০ দিনের জন্য ফারাক্কা বাঁধ চালু করা হইয়াছিল। তাহার আগে দুই দেশের মধ্যে একটা স্বল্পমেয়াদি চুক্তিও সম্পাদিত হয়। ঐ চুক্তি অনুসারে ফারাক্কা হইতে শুকনা মৌসুমে সর্বনিম্ন ১১,০০০ হইতে সর্বোচ্চ ১৬,০০০ কিউসেক পানি কলিকাতার দিকে ছাড়া যাইবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পূর্বসুরিরা তাহাতে বড় সন্তুষ্ট হন নাই। তাঁহাদের দাবি ছিল কমপক্ষে ৪০,০০০ কিউসেক পানি না হইলে তো কলিকাতার পলি ধুইয়া যাইবে না।
ঐ চুক্তিতে বাংলাদেশেও দুধের নহর বহিয়া যায় নাই। দুষ্ট লোকেরা বলিয়া থাকে, ১৯৭৫ সনের ক্ষমতা পরিবর্তনে এই চুক্তিও ছোট একটা ভূমিকা পালন করিয়াছিল। করিয়াছিল বৈকি। নতুন করিয়া লেখা ১৯৭৭ সনের নবেম্বরের চুক্তি অনুসারে ভারতকে ২০,৫০০ কিউসেক পানি তুলিয়া লওয়ার সুযোগ দেওয়া হইয়াছিল। বাংলাদেশের ভাগে পড়িয়াছিল মাত্র ৩৪,৫০০ কিউসেক।
পদ্মার পানি লইয়া ১৯৮৫ সনের অক্টোবরে বাংলাদেশের সহিত ভারতের আরেকটি তিন বছর মেয়াদি সমঝোতা হয়। ১৯৮৮ সালের নবেম্বরের পর ভারত একতরফাভাবে পানি তুলিয়া লইতে শুরু করে। সেই বছরই আগস্ট-সেপ্টেম্বর নাগাদ বাংলাদেশে অভূতপূর্ব বন্যা দেখা দেয়। এরশাদ সরকারের মৃত্যুঘণ্টা তখনই প্রথম বাজিতে শুরু করে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় বসিবার পর—আহা, গোটা ২৪ বছর পর—১৯৯৬ সনের চুক্তি লেখা হয়। ইহার পর একটা আশা জাগিয়াছিল যে অন্যান্য অভিন্ন নদীর পানি ভাগাভাগিও চুক্তির মাধ্যমে সম্ভব হইবে। অন্যান্য নদীর মধ্যে তিস্তা, বারাক, মনু, মুহরির কথাই প্রথমে মনে পড়িতেছে।
১৯৯৭ সনের জুলাই মাসে দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের লইয়া গঠিত জে.ই.সি. বা যৌথ বিশেষজ্ঞ কমিটির কার্যতালিকায় তিস্তার বিষয়টি প্রাধান্য পাইবে এমন কথাই বলা হইয়াছিল। আজ কুড়ি বছর পার হইতে চলিল। মনে হইতেছে তিস্তার পথ আরও দূরে সরিয়া গেল। দুষ্ট লোকের কথায় কান দিতে নাই। শুনিতেছি—উহাদের মধ্যে কেহ কেহ বলিতেছেন—বাংলাদেশের সরকার পরিবর্তনের পথ সুগম করিবার জন্যই হয়ত ভারত এই চুক্তি স্বাক্ষর করিতেছে না।
হঠাৎ কেন যেন ঠাকুরের কথা মনে পড়িয়া গেল। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঁচিয়া থাকিলে আজ কি ধরনের পদ্য লিখিতেন? তাঁহার একটি ছদ্মনাম ছিল ভানুসিংহ ঠাকুর। এটা ছোটবেলার খেলা। আরেকটা ভাড়ানো নাম ছিল বড়বেলার—বাণীবিনোদ বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠাকুরেরা যে পতনের আগে বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন তাহা অনেকদিন জানিতাম না। পরলোকগমনের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে (৩০ জুলাই ১৯৪১) ঠাকুর এই কবিতাটি লিখিয়াছিলেন। অতয়েব আমার এই দীন নিবন্ধও এই কবিতা দিয়াই পরলোক উপগমন করুক।
তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি
বিচিত্র ছলনাজালে
হে ছলনাময়ী!
মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদ পেতেছ নিপুণ হাতে
সরল জীবনে!
এই প্রবঞ্চনা দিয়ে মহত্ত্বেরে করেছ চিহ্নিত;
তার তরে রাখ নি গোপন রাত্রি।
তোমার জ্যোতিষ্ক তারে
যে পথ দেখায়
সে যে তার অন্তরের পথ,
সে যে চিরস্বচ্ছ,
সহজ বিশ্বাসে সে যে
করে তারে চিরসমুজ্জ্বল।
বাহিরে কুটিল হোক, অন্তরে সে ঋজু
এই নিয়ে তাহার গৌরব।
লোকে তারে বলে বিড়ম্বিত।
সত্যেরে সে পায়
আপন আলোকে-ধৌত অন্তরে অন্তরে।
কিছুতে পারে না তারে প্রবঞ্চিতে,
শেষ পুরস্কার নিয়ে যায় সে যে
আপন ভাণ্ডারে।
অনায়াসে যে পেরেছে ছলনা সহিতে
সে পায় তোমার হাতে
শান্তির অক্ষয় অধিকার ॥
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবিতা লিখিতে জানেন এমন প্রমাণ হাতে পাই নাই। কিন্তু তিনি যে কবিতার সমজদার পরিচয়েও কম যাইবেন না তাহার প্রমাণ ঢের পাইয়াছি। একজন যোগ্য কবির দোহাই দিয়া তিনি লিখিয়াছেন, ‘বন্ধুত্ব বহতা নদীর মতন’। বহতা নদী যদি তাহার স্রোত হারাইয়া ফেলে! সেই নদী মরিয়া যায়। শেখ হাসিনা কি অজ্ঞানে এই বার্তাটাই দিয়াছেন? এই মরা নদীর কান্না কে না শুনিতে পায়? শুদ্ধ পায় না যে তাহাকেই বলি, প্রভু নহ প্রতিবেশী।
লেখক : চিন্তাবিদ ও প্রাবন্ধিক