প্রতিক্রিয়া
জিপিএ ৫ বিতর্ক ও কিছু প্রশ্ন
ধরুন, এসএসসিতে ‘স্টার’ বা ‘স্ট্যান্ড’ করা কোনো শিক্ষার্থী যদি বলতেন ‘আমি স্ট্যান্ড করেছি’-এর ইংরেজি ‘I am stand’, তাহলে অবাক হওয়া অস্বাভাবিক হতো না। কারণ, আগেকার নম্বর পদ্ধতিতে ‘স্টার’ বা ‘স্ট্যান্ড’ ছিল চূড়ান্ত ফলাফল। একইভাবে জিপিএ ৫-ও চূড়ান্ত ফলাফল অর্থাৎ এরপর আর কিছু নেই। তাই সঙ্গত কারণে মাধ্যমিকে জিপিএ ৫ বা চূড়ান্ত ফলাফল অর্জনকারীদের জ্ঞান ও মেধা ভালো হবে, এটা প্রত্যাশা করাই তো স্বাভাবিক। সুতরাং চূড়ান্ত ফলাফল আমরা কার হাতে তুলে দিচ্ছি, প্রশ্নটা সেখানেই। অথবা চূড়ান্ত ফলাফল অর্জনের শর্টকাট ওয়ে তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে কি না, প্রশ্নটা সেখানেও।
সম্প্রতি জিপিএ ৫ পাওয়াদের দুর্বলতা নিয়ে মাছরাঙা টেলিভিশনে প্রচারিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। প্রতিবেদনটি যাঁরা দেখেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই ‘হায়...হায়!’ করছেন। কারণ প্রতিবেদনটিতে দেখা যায়, জিপিএ ৫ পাওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী খুবই সাধারণ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছেন না। যেমন এক ছাত্রকে জিজ্ঞেস করা হয়- ‘আমি জিপিএ ৫ পেয়েছি’-এর ইংরেজি কী? তিনি উত্তরে বলেছিলেন, ‘I am GPA 5’। চূড়ান্ত ফলাফল অর্জনকারী শিক্ষার্থীর কাছে এমন উত্তর শুনে হোঁচট খাওয়াটাই স্বাভাবিক। বিজ্ঞান বিভাগে পড়া আরেক শিক্ষার্থী নিউটনের তত্ত্বটির নাম কী, তা বলতে পারলেন না। এসএসসিতে যাঁরা বিজ্ঞান নিয়ে পড়েছেন, নিউটনের তত্ত্ব জানা তাঁদের ক্ষেত্রে খুবই সাধারণ ব্যাপার। আর, পিথাগোরাসকে ঔপন্যাসিক বলাটাও সদ্য এসএসসি পাস করা ছাত্রকে মানায় না। কারণ, অষ্টম শ্রেণির গণিত বইয়ে ‘পিথাগোরাসের উপপাদ্য’ নামে একটি অধ্যায়ই আছে। এ ছাড়া, এসএসসিতে ভালো ফলাফল অর্জন করা শিক্ষার্থীর মুখে ১৬ ডিসেম্বরকে স্বাধীনতা দিবস শুনলে খটকাই লাগে। পাঠকরা মাছরাঙা টিভির প্রতিবেদনটি দেখে থাকলে এ বিষয়ে আর উদাহরণ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
হ্যাঁ, ওই সংবাদ প্রতিবেদন প্রমাণ করে না যে জিপিএ ৫ পাওয়া সব ছাত্রছাত্রীই অমেধাবী। কিন্তু এটাও ঠিক যে বর্তমানে শিক্ষার মান নিয়ে অধ্যাপক জাফর ইকবালসহ অনেক শিক্ষাবিদই প্রশ্ন তুলে চলেছেন। আর বাস্তবতা এও যে, বর্তমানে কোনো শিক্ষার্থী এসএসসি বা এইচএসসিতে জিপিএ ৫ অর্থাৎ চূড়ান্ত ফলাফল অর্জন করার পরও, তাকে মেধাবী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে আমাদের মনে সংশয় ও দ্বিধা তৈরি হচ্ছে। ফলে এটি জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর এক ধরনের মানসিক চাপ কিংবা হীনমন্যতা তৈরির কারণও হচ্ছে। এখন কী কী কারণে জিপিএ ৫ পাওয়াদের প্রতি এই অনাস্থা, কিংবা এর দায় কার, সে সম্পর্কে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করব। তার আগে মাছরাঙা টিভির ওই প্রতিবেদনের পক্ষে-বিপক্ষে যে যুক্তি-তর্ক হচ্ছে, একজন নগণ্য সংবাদকর্মী হিসেবে তা নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই।
১. জ্ঞানীগুণী অনেকেই বলছেন, প্রতিবেদনটিতে সংবাদের এথিকস বা নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে। হ্যাঁ ঠিক। সবে স্কুলের গণ্ডি পেরুনো যেসব শিক্ষার্থীকে অমেধাবী হিসেবে টেলিভিশনের পর্দায় তুলে ধরা হলো, তারা নিঃসন্দেহে পারিবারিক ও মানসিক চাপে পড়বে। তা ছাড়া, এতে সামাজিকভাবে তাদের সম্মানহানিও হয়েছে। তাই এথিকস লঙ্ঘনের প্রশ্ন তোলাই যায়। কিন্তু এমন এথিকস তো আমরা প্রতিদিনই কত লঙ্ঘন করছি। অনুসন্ধানের নামে হুটহাট করে ক্যামেরা নিয়ে বিনা অনুমতিতে মানুষের বাসায় ঢুকে যাচ্ছি। নিষেধ সত্ত্বেও ছবি তুলছি। আবার কখনো প্রচারের সময় লিখে দিচ্ছি ‘গোপনে ধারণকৃত’। তখন কিন্তু এসব নিয়ে বিজ্ঞজনরা খুব একটা প্রশ্ন তোলেন না।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আদালতে প্রমাণ হওয়ার আগেই যাকে তাকে ‘ডাকাত’, ‘ধর্ষণকারী’, ‘অপহরণকারী’ ‘মাদকসম্রাজ্ঞী’ ‘সন্ত্রাসী’ ‘জঙ্গি’ ট্যাগ লাগিয়ে মিডিয়ার সামনে হাজির করে। আমরা গণমাধ্যমও তখন গা ভাসিয়ে দেই। আমরাও নির্বিচারে ওই মানুষগুলোকে অপরাধী হিসেবে খবর প্রচার করি। এতে সামাজিকভাবে তাদের কতখানি সম্মানহানি হলো, সে ব্যাপারে আমাদের সিনিয়ররা খুব একটা ভেবেছেন বলে মনে হয় না। ভাবলেও এ ধরনের সংবাদ প্রচার ইস্যুতে কোনো শক্ত অবস্থান নিয়েছেন বলেও জানা নেই। একটা খারাপ দৃষ্টান্ত রয়েছে বলে আরেকটা খারাপ কিছু করতে হবে, আমি সেটা বলছি না। এথিকস নিয়ে প্রশ্নটা সব জায়গাতেই তোলা উচিত- এটা বলতে চাইছি।
২. মাছরাঙা টিভির ওই প্রতিবেদনটি সাজানো বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। একজন সংবাদকর্মীর চোখ দিয়ে যতটুকু দেখেছি ও বুঝেছি, সেটি মোটেই সাজানো মনে হয়নি। তা সম্ভবও নয়। কারণ, জিপিএ ৫ পাওয়া কোনো শিক্ষার্থীই টেলিভিশনের পর্দায় নিজেকেই অযোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইবে না। তা ছাড়া, আপনার আশপাশে গত তিন-চার বছরে জিপিএ ৫ পেয়েছে, এমন শিক্ষার্থীকে কিছু সহজ ও মৌলিক প্রশ্ন করে দেখুন। ফলাফলটা খুব একটা উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা কম। গ্রেডিং পদ্ধতি নিয়ে ব্যক্তিগত গবেষণা ও বেশ কিছু কাজ করার অভিজ্ঞতা অন্তত তাই-ই বলে।
৩. কেউ কেউ বলছেন, প্রতিবেদনটিতে সাক্ষাৎকার দেওয়া ছাত্রছাত্রীদের অপমান করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবদনের কোনো অংশেই শিক্ষার্থীদের দোষারোপ করা হয়নি বা তাদের ওপর দায় চাপানো হয়নি। মূলত, লাখ লাখ জিপিএ ৫ এবং শিক্ষার মান নিয়ে চলমান প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা হয়েছে। শিক্ষার মান যাচাই নিঃসন্দেহে একটি বিস্তর প্রক্রিয়া। সে দায়িত্ব দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের। টেলিভিশন সংবাদের সীমিত পরিসরে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর সাক্ষাৎকার নেওয়া সম্ভব নয়। তাই কেস স্টাডি হিসেবে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেই একটা ধারণায় পৌঁছাতে হয়। সংবাদের প্রয়োজনে আমরা এক-দুজন বিশেষজ্ঞের মন্তব্য নিয়ে থাকি। কিন্তু আমরা বলি ‘বিশেষজ্ঞরা বলছেন...’। এক দুজন বিশেষজ্ঞ নিশ্চয়ই সব বিশেষজ্ঞের প্রতিনিধিত্ব করে না। কিন্তু গণমাধ্যমকে কয়েকজনের মন্তব্য থেকে একটা সাধারণ ধারণায় পৌঁছাতে হয়। কারণ, সব বিশেষজ্ঞের মতামত জানা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়।
আবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল প্রতিবছর দুর্নীতির ধারণাসূচক প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানান দেয়, বিশ্বের কোন দেশ কতটা দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের জরিপেও একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে কিছু প্রশ্ন করা হয়। সাধারণ মানুষ সরকারের সেবা নিতে গিয়ে যে প্রতিবন্ধকতা বা হয়রানির মুখোমুখি হয়েছে, অবৈধ লেনদেন করতে হয়েছে- এমন বিষয়গুলো জরিপে বিবেচিত হয়। অর্থাৎ টিআই-এর পক্ষেও সব মানুষের মতামত নেওয়া সম্ভব হয় না।
আসলে, কোনো একটি বড় সমস্যা সংবাদের মাধ্যমে তুলে ধরতে হলে সেটি যৌক্তিক উদাহরণের মাধ্যমে প্রমাণ তো করতে হবে। আমার মনে হয়, রিপোর্টার সেই চেষ্টাটিই করেছেন। রিপোর্ট নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে। তবে শিক্ষার মান নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, জ্ঞানীগুণীরা সেদিকে বেশি মনোযোগ দিলেই বোধহয় ভবিষ্যতে এ ধরনের রিপোর্টের আর প্রয়োজন হবে না।
এবার আসি কী কী কারণে জিপিএ ৫ পাওয়াদের মেধার প্রতি অনাস্থা বা অবমূল্যায়ন।
১. মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ ৫ পেতে হলে ১১টি বিষয়ের মধ্যে অন্তত ১০টি বিষয়ে A+ পেতে হয়। আর A+ মানে ৮০ ভাগ নম্বর। ২০০১ সালে গ্রেডিং পদ্ধতির শুরুর কয়েকটি বছর প্রত্যেকটি বিষয়ে ৮০ ভাগ নম্বর তোলা সহজ কথা ছিল না। হাতে গোনা অত্যন্ত মেধাবীরা তা পেত। তাই, ২০০১ সালে সারা দেশে জিপিএ ৫ পায় মাত্র ৭৬ জন। আর ২০০২ সালে ৩৩০ জন, ২০০৩ সালে এক হাজার ৫৯৭ জন, ২০০৪ সালে আট হাজার ৫৯৭ জন, ২০০৫ সালে ১৫ হাজার ৬৩১ জন। তখন পর্যন্ত সংখ্যাটা সীমিত থাকায় জিপিএ ৫ পাওয়াদের খুবই মেধাবী হিসেবে গণ্য করা হতো। সে সময় জিপিএ ৫-প্রাপ্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধে খুব সহজেই উত্তীর্ণ হতো। এমনকি তখন জিপিএ ৩.০০, জিপিএ ৩.৫০, জিপিএ ৪-প্রাপ্তরাও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারত। অর্থাৎ গ্রেডিং পদ্ধতির প্রথম কয়েক বছর কেউ জিপিএ ৫-এর কাছাকাছি পেলেও মেধাবী হিসেবে গণ্য হতো। যেমন- ৪.০০, ৪.২৫, ৪.৪০, ৪.৫০, ৪.৭৫, ৪.৮০।
কিন্তু পরবর্তী বছরগুলোতে লাফিয়ে লাফিয়ে জিপিএ ৫-এর সংখ্যা বেড়েছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালের এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েছে এক লাখ নয় হাজার ৭৬১ জন। এত এত শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পাওয়ায় এর প্রতি মানুষের সম্মান ও বিশ্বাস দুটোই কমেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শিক্ষার্থীদেরই। কেননা, জিপিএ ৫ ধারীরাই অনেকে বুয়েটেসহ নামকরা কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় টিকতে পারছে না। কারণ, কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান শর্ত দিচ্ছে- চতুর্থ বিষয়সহ মোট ১১টি বিষয়েই A+ থাকতে হবে। অর্থাৎ কথিত ‘গোল্ডেন A+’। তা ছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বরটুকুও তুলতে পারছে না অনেকেই।
২০০১ সালে পাস করা দুজন শিক্ষার্থীকে আমি চিনি, যাঁদের এসএসসিতে জিপিএ ছিল ৪.৫০। পরে তাঁরা দুজনই বুয়েটে লেখাপড়া করেছেন। আর আমার নিজের ভাতিজি ২০১৫ সালে এসএসসিতে জিপিএ ৪.৫০ পেয়েছে। তাঁকে খুবই সাধারণ কিছু ইংরেজি অনুবাদ কিংবা বাংলা থেকে ইংরেজি করতে বলা হলে, পারে না বললেই চলে।
জিপিএ ৫-এর সংখ্যা লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে জিপিএ ৫ না পাওয়া শিক্ষার্থীরা। কারণ তাদের কোথাও জায়গা হচ্ছে না। পরিবার ও সমাজ থেকে গ্লানি তো পাচ্ছেই, ভালো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির স্বপ্ন দেখতে মানা। কারণ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কলেজও আবেদনের যোগ্যতা হিসেবে শর্ত দিচ্ছে এসএসসি ও এইচএসসি, দুটোতেই জিপিএ ৫ থাকতে হবে। তাই, ভীষণ হতাশা গ্রাস করছে জিপিএ ৫ না পাওয়াদের। শেষমেশ, লাখ লাখ টাকা খরচ করে তৃতীয় সারির কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ই হচ্ছে তাদের ঠিকানা।
২. আগে অত্যন্ত কড়াকড়িভাবে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হতো। কিন্তু মাঝের বছরগুলোতে তা শিথিল করা হয়। উদারভাবে খাতা দেখতে পরীক্ষকদের লিখিত নির্দেশনা দেওয়ার খবর প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় অনেক এসেছে। কোনো বোর্ডের ফলাফল খারাপ হলে বোর্ড চেয়ারম্যানকে ডেকে কৈফিয়ত চাওয়ার খবরও গণমাধ্যমে লেখা হয়। ফলে জিপিএ ৫-এর মর্যাদা অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
৩. শিক্ষার্থীদের মুখস্থ বিদ্যা থেকে সরিয়ে আনতে বর্তমানে সৃজনশীল পদ্ধতি চালু রয়েছে। কিন্তু প্রচলিত সৃজনশীল পদ্ধতি এমন এক পদ্ধতি, যেখানে কোনো অঙ্ক পুরোপুরি করতে না পারলেও যতটুকু ঠিক করেছে তার জন্য নম্বর দেওয়া হয়। অথচ আগে অঙ্কের উত্তর না মিললে কোনো নম্বর দেওয়া হতো না। ফলে জিপিএ ৫ পাওয়াটাও সহজ হচ্ছে।
৪. বাংলা, ইংরেজিসহ এখনকার মৌলিক বিষয়ের প্রশ্নপত্রগুলোর ধরন মোটামুটি একই রকম। আগেকার পদ্ধতিতে বেশির ভাগ প্রশ্নের উত্তর বর্ণনামূলক লিখতে হতো। ফলে নম্বর কমবেশি হওয়ার ব্যাপার থাকত। কিন্তু এখনকার প্রশ্নপত্রে শূন্যস্থান পূরণ করো, এলোমেলো বাক্য সাজিয়ে লেখো, নিচের শব্দ দিয়ে বাক্য তৈরি করো-এ ধরনের প্রশ্নই বেশি থাকে। ফলে একটি প্রশ্নের জন্য এক নম্বর পাওয়া যায়। অর্থাৎ নম্বর কাটা যাওয়ার সুযোগ তুলনামূলক কম।
সবশেষে বলা যায়, অযথাই ভীষণ কঠোরভাবে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে কোনো শিক্ষার্থীকে যেমন ভালো নম্বর পাওয়া থেকে বঞ্চিত করাটা সমর্থনযোগ্য নয়, তেমনি মূল্যায়ন প্রক্রিয়াও স্বাভাবিক গতিতে চলাটাই কাম্য। যে পাস করার যোগ্য সে পাস করবে, যার জিপিএ ৫-এর যোগ্যতা আছে সে পাবে, আর যার ফেল করার কথা সে ফেলই করবে।
শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন সহজ করা জরুরি। তবে পরীক্ষার খাতায় বেশি নম্বর তোলার সহায়ক কারিকুলাম শিক্ষার্থীকে জিপিএ ৫ এনে দেবে বটে, মেধা চর্চার সুযোগ কমে যাবে। রাজনীতির মঞ্চে অনেক কিছু নিয়েই প্রতিযোগিতা হয়, কিন্তু অতীত, বর্তমান কিংবা ভবিষ্যতের যে কোনো রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার বাইরে থাকুক শিক্ষা ও শিক্ষার্থী। এটা দেশের স্বার্থেই দরকার।
লেখক : সিনিয়র রিপোর্টার, চ্যানেল 24