মৃত্যুঞ্জয়ী শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ওরে ভয় নাই; নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।’ হাজারো বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর। যিনি বঙ্গবন্ধুর জীবনেরও সাথী, মরণেরও সাঁথি। সে মহানায়ক অবহেলিত উত্তর জনপদের প্রাণ পুরুষ বৃহত্তর পাবনার কৃতী সন্তান শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ ৩ নভেম্বর।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ সহচর ও সহযোদ্ধা এবং বঙ্গবন্ধু সরকারের সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শহীদ এম মনসুর আলী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরেই যাঁদের ত্যাগ, অবদান ও জীবন দান উজ্জ্বল এবং ভাস্বর, তাঁদের মধ্যে শহীদ এম মনসুর আলীর নাম বাদ দিলে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এই মহৎপ্রাণ শহীদ এম মনসুর আলী সম্পর্কে যা আমাদের অবশ্যই জানার প্রয়োজন তার খুবই সংক্ষিপ্ত অংশ এখানে জানতে পারব।
জন্ম : শহীদ এম মনসুর আলীর জন্ম ১৯১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কুড়িপাড়া গ্রামে। কুড়িপাড়া থেকে সিরাজগঞ্জ শহরের দূরত্ব প্রায় ১৯-২০ কিলেঅমিটার। যমুনায় ভাঙনের পরে তারা কাজীপুর উপজেলার মেঘাই এলাকায় বসবাস শুরু করেন।
পারিবারিক পরিচয় : শহীদ এম মনসুর আলী জন্ম গ্রহণ করেন অভিজাত মুসলিম পরিবারে। বাবার নাম হরফ আলী সরকার, মা বেগম রওশন আরা।
শিক্ষাজীবন : শহীদ এম মনসুর আলী শিক্ষা জীবনে পাঁচ বার বৃত্তি পেয়েছিলেন। তাঁর শিক্ষা শুরু হয়েছিল কাজীপুরের গান্ধাইল মাইনর স্কুলের মাধ্যমে। এরপর ১৯৩৫ সালে সিরাজগঞ্জের বি.এল স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৩৭ সালে আইএ পাস করেন রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে। ১৯৪১ সালে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএ এবং ১৯৪৪ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেণিতে এমএ ও এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।
বৈবাহিক জীবন : সহধর্মিণী মহীয়সী নারী মোসাম্মৎ আমিনা খাতুন। তিনি বেগম আমিনা মনসুর আলী হিসেবে নাম সার করতেন। আমিনা মনসুরের জন্ম এক সম্ভ্রান্ত ও শিক্ষিত পরিবারে। তাঁর বাবা মরহুম আমির উদ্দিন সরকার ছিলেন জেলা জজ। স্থায়ী বাসস্থল ও জন্মস্থান বর্তমান গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানার জজ বাড়ি। মা মরহুম রওশন আরা বেগম সম্ভ্রান্ত জমিদার বংশের মেয়ে।
ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী : শহীদ এম মনসুনর আলী সেনাবাহিনীর কোনো ক্যাপ্টেন ছিলেন না। তিনি ছিলেন পাকিস্তান ন্যাশনাল গার্ডের ক্যাপ্টেন। এ বিষয়ে যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন।
কর্মজীবন: এম মনসুর আলীর কর্মজীবন শুরু হয় আইন পেশার মাধ্যমে। পাবনা বারে যোগ দেন ১৯৪৫। তিনি ১৯৫৮ সালে যোগ দেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান হাই কোর্ট বারে। শহীদ এম মনসুর আলী ১৯৭০ সালে পাবনা আইন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ৭০ সালের ১ জুলাই থেকে ৭২ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত কলেজের অবৈতনিক অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে তাঁরই উদ্যোগে কলেজের নামকরণ করা হয় শহীদ আমিনুদ্দিন আইন কলেজ। ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সিরাজগঞ্জের কাজীপুর নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আতাউর রহমান খান যখন তৎকালীন পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন, তখন প্রাদেশিক মন্ত্রিসভায় ক্যাপ্টেন মনসুর আলী তিনটি মন্ত্রণালয়ের (খাদ্য, আইন ও রাজস্ব) দায়িত্ব নিয়ে মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জাতীয় পরিষদের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মুজিবনগর মন্ত্রিসভায় এম মনসুর আলী ছিলেন অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী। ১৯৭২ সালের সদ্য স্বাধীন বিধ্বস্ত বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু সরকারের পুনর্গঠিত মন্ত্রিসভায় এম মনসুর আলী দায়িত্ব পান যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের। মনসুর আলী তাঁর একনিষ্ঠতা, সততা ও কর্মদক্ষতার কারণে ১৯৭৪ সালের ৮ জুলাই যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব পান। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রেসিডেন্ট এবং এম মনসুর আলীকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
দেশের জন্য জীবন দান : ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এম মনসুর আলী ছিলেন পাবনার বাড়িতে। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাসঘাতকদের হাতে ১৫ আগস্টে সপরিবারে নিহত হন। ছেলে মোহাম্মদ নাসিমের টেলিফোনে এই খবর জানতে পারেন। এরপর মনসুর আলী আবার ঢাকায় আসেন। ‘মীরজাফর’ খন্দকার মোশতাক আহমেদের অবৈধ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন না করায় মনসুর আলীসহ বঙ্গবন্ধুর চার বিশ্বস্ত অনুসারীকে আটক করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে ঘটে পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড। জেলখানার ভেতরে নৃশংসভাবে খুন করা হয় জাতীয় চার নেতা এম মনসুর আলী, তাজউদ্দিন আহম্মদ, এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও সৈয়দ নজরুল ইসলামকে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি বলেন, ‘শহীদ এম মনসুর আলী আমার পিতা, আমার অহংকার। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ ও আমার জীবনের বড় পরিচয় আমার পিতা শহীদ এম মনসুর আলী। আমি আমার পিতাকে হারিয়েছি এর চেয়ে বড় বেদনার, আর এর চেয়ে বড় কষ্ট আমার জীবনে কিছু নাই।’
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘শহীদ এম মনসুর আলী সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে চারজন জাতীয় নেতা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সফল নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তার অন্যতম শহীদ এম মনসুর আলী। যিনি আমার গর্বিত পিতা এবং সব সময় সব মুহূর্তে আদর্শিক নেতা।’
‘যখনি আমি কোনো কাজ করি, চিন্তা করি সে সময় আমার চিন্তা-চেতনায় সব সময় আমার বাবার স্পর্শ- আবেগ অনুভব করি। তিনি যেমন জীবনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন, তেমনি মরণেও আজকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেই আছেন। আমার পিতা তাঁর পরিবারের বাইরে প্রতিটি মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর কথা ভাবতেন, বঙ্গবন্ধুর কথা বলতেন। বঙ্গবন্ধু ছাড়া যেন তাঁর কোনো অস্তিত্ব ছিল না। মাঝে মাঝে আমার মনে হতো তিনি যেন আমাদের চাইতে বঙ্গবন্ধুকে বেশি ভালোবাসতেন। তিনি যখন রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছেন সেই মুহূর্ত থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু ছাড়া তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কোনো কিছু করারই চিন্তা করতেন না।’
‘আমি তাঁর সন্তান হিসেবে দেখেছি ৬ দফা আন্দোলন যখন বঙ্গবন্ধুর অনেক সহকর্মী তাঁকে ত্যাগ করে চলে গেছেন কারাবন্দি অবস্থা থেকেও আমার পিতা এম মনসুর আলী শত প্রলোভন ও চাপের মুখেও তখনকার পিডিএমপন্থী আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান খান, সালাম খানদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। অথচ র্দীঘ কারাজীবন ভোগ করেছেন। কিন্তু নেতা শেখ মুজিবের সঙ্গে বেঈমানি করেননি। আমার পিতার দৃঢ় অভিব্যক্তি মনোভাবকে দেখেছি তখন আমি। ১৯৬৬-৬৭ সালে যখন শহীদ এম মনসুর আলী পাবনা কারাগারে বন্দি ছিলেন, আমিও ছাত্রাবস্থায় পিতার সঙ্গে সে মুহূর্তে একই কারাগারে আটক ছিলাম। দীর্ঘ রাজনৈতিক লড়াই, সংগ্রাম শেষে যখন একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, বঙ্গবন্ধু যখন পাকিস্তানে কারাগারে বন্দি তখন আমার পিতাসহ জাতীয় চার নেতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে মুজিবনগর সরকার গঠন করে মুক্তিযুদ্ধেও সফল নেতৃত্ব দেন। সেই বিরল মুহূর্তগুলো দেখার বা জানার আমার সুযোগ হয়েছে। আমি দেখেছি সেই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে শহীদ এম মনসুর আলী কী দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ মনোভাব নিয়ে স্বাধীনতার বিজয় এবং জীবিত বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার জন্য অন্য তিন জাতীয় নেতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং কাজ করে গেছেন। খন্দকার মোশতাকের মতো একজন সুযোগ সন্ধানী বিশ্বাসঘাতক ওই প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের মুহূর্তেও চেষ্টা করেছে এই চারজনের মধ্যে ফাটল ধরাবার জন্য এবং স্বাধীনতার প্রশ্নে আপস করার নানা প্রলোভনের জাল বিস্তার করে মুজিবনগর নেতৃত্বকে বিভ্রান্ত করার। কিন্তু একটি বিপজ্জনক এবং জাতির যুগসন্ধিক্ষণে এম মনসুর আলী অন্য তিন নেতার সঙ্গে থেকে সব ভয়-ভীতি, অনিশ্চয়তা ও প্রলোভন উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধকে সফল করেছেন।’
‘সফেদ সাদা পায়জামা, পাঞ্জাবি পরে আমার পিতা মনসুর আলী এই ক মাস অত্যন্ত সাধারণ জীবন- যাপনের মধ্য দিয়ে মুজিবনগরের রণাঙ্গনে ছুটে বেরিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে থেকেছেন, সাহস দিয়েছেন। প্রবাসী সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে শত শত তাঁর দলীয় সহকর্মী, দেশ থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার কর্মীকে আর্থিক সাহায্য করার চেষ্টা করেছেন। আমি দেখেছি হাজার অনিশ্চয়তা ও অমানিশা অন্ধকারের মধ্যেও সাধারণ বাঙালির চেয়েও দীর্ঘদেহী আমার পিতার উজ্জ্বল প্রত্যয় মুখচ্ছবি। তিনি সর্বদা বলতেন, ‘জীবিত বঙ্গবন্ধুকে আমরা ইনশাল্লাহ মুক্ত করব।’ আসলে জাতীয় চার নেতার নেতৃত্বে মুজিবনগরে যে মুক্তিযুদ্ধের সফল নেতৃত্ব সংগঠিত হয়েছিল তা নিয়ে একটি মহাকাব্য রচনা করা যেতে পারে। একটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশের যোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তোলা, চট্টগ্রাম ও খুলনা পোর্ট পুনরায় চালু করে কার্যকর বন্দরে পরিণত করা, সর্বোপরি এক নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, স্বাধীনতাবিরোধী এবং তথাকথিত হঠকারী বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রী নামধারীকারীদের অপতৎপরতা রোধ করে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবু তিনি সেসবের মোকাবিলা করেছেন।’
‘আমার পিতাকে চিরদিনের জন্য হারানোর আগে মাত্র কয়েক ঘণ্টা তার সঙ্গে আমি ছিলাম। ১৫ আগস্টের সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। সে সময় তাকে দেখেছি কী উদ্বেগ ও প্রচণ্ড বেদনা নিয়ে একদিকে বঙ্গবন্ধুকে হারানোর কথা মনে করছেন, অন্যদিকে প্রতিশোধ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার অদ্যম ইচ্ছে নিয়ে দলীয় সহকর্মী এবং তদানীন্তন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন। শহীদ এম মনসুর আলী আত্মগোপন অবস্থায়ও চেষ্টা করেছেন নানাভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য। কিন্ত কিছু সহকর্মীর ভীরুতা, আপস এবং জীবন রক্ষার প্রাণান্ত চেষ্টা, অন্যদিকে তখনকার সামরিক-বেসামরিক নেতৃত্বের চরম ব্যর্থতা, চরম কাপুরুষতায় শহীদ এম মনসুর আলী ভীষণভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন এবং হতাশ হয়েছিলেন। কিছু করতে না পারার বেদনা এবং অশ্রুসিক্ত চেহারা আমি দেখেছিলাম। কিন্ত একটা জিনিস ধ্রব তারার মতো সত্য, তিনি জীবন দেবেন। আমার পিতা শহীদ এম মনসুর আলী বিশ্বাসঘাতক মোশতাকের মুখের ওপর বলেছিলেন, ‘তোমার মতো বেঈমানের সাথে আমি হাত মেলাব না। জীবন দেব, প্রধানমন্ত্রী হব না।’ তিনি তাঁর কথা রেখেছেন। শহীদ এম মনসুর আলী আপস করেননি, আত্মসমর্পণ করেননি, জীবনের ভয়ে মাথানত করেননি, ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে বন্দি অবস্থায় ঘাতকের হাতে জীবন দিয়েছেন।’
‘চার মৃত্যুঞ্জয়ী নেতার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে চিরদিন। যাঁরা জীবন দিয়েছেন, জাতির জনকের সাথে বেঈমানি করেননি। তাদের ভেতর একজন আমার পিতা শহীদ এম মনসুর আলী। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ ও আমার জীবনের বড় পরিচয়। আমার জীবনে সবচেয়ে বড় গর্ব ও অহংকার হলো আমি খন্দকার মোশতাকের মতো বড় বেঈমানের সন্তান নই। শহীদ এম মনসুর আলীর মতো একজন সাহসী মৃত্যুঞ্জয়ী পিতার সন্তান। নেতা বা নেতার আদর্শের সঙ্গে বেইমানি নয়, বিশ্বাসঘাতকতা নয়, কোনো আপসকামিতা নয়। আমার শহীদ পিতার এই আদর্শ ধরেই আমি কাজ করছি, কাজ করে যাব। ৩ নভেম্বরে শহীদ পিতার প্রতি এটাই আমার প্রত্যয়দীপ্ত শ্রদ্ধা।’ বলছিলেন মোহাম্মদ নাসিম।