সিঙ্গাপুরে করোনায় আটকা বাংলাদেশি শ্রমিক, পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তা
আটাশ বছর বয়সী রুবেল সিঙ্গাপুরের একজন অভিবাসী শ্রমিক। কিন্তু এখন বেশ আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁর। তিনিসহ অন্যান্য দেশের শ্রমিকরা যে ডরমিটরিতে থাকেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সেটিকে লকডাউন করা হয়েছে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে কাউকেই সেখানে ঢুকতে ও বের হতে দেওয়া হচ্ছে না।
সিঙ্গাপুরে ডরমিটরিতে থাকা অভিবাসী শ্রমিকদের মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তথ্য পাওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে দেশটির সরকার ডরমিটরিগুলোকে আইসোলেট করে রাখা, শ্রমিকদের নমুনা পরীক্ষা করা, করোনার লক্ষণ পেলে শ্রমিকদের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নেয়। সংবাদমাধ্যম সিএনএন আজ শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
কিন্তু এমন পদক্ষেপের ফলে কয়েক হাজার শ্রমিক ডরমিটরিতে আটকা পড়েন। সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো উপায় নেই।
সিঙ্গাপুরে প্রায় ১০ লাখ ৪০ হাজার অভিবাসী শ্রমিক রয়েছেন, যাঁরা মূলত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের নাগরিক। গৃহকর্মী, নির্মাণ শ্রমিক ও অন্যান্য শ্রমিক যাঁরা আছেন, তাঁরাই সিঙ্গাপুরকে সচল রাখেন। এ ছাড়া তাঁরা শহরের সবচেয়ে কম পারিশ্রমিক পাওয়া ও অসহায় মানুষ।
রুবেল ছয় বছর আগে জীবিকার তাগিদে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যান। কাজ করে পরিবারের জন্য অর্থ পাঠাতেন তিনি। কিন্তু এখন তাঁর স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকির মুখে। তাঁর ওপর নির্ভর করা পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন রুবেল।
রুবেল বলেন, ‘আমি করোনাভাইরাস নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় আছি। কারণ, আমি যদি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হই, তাহলে আমি আমার পরিবারকে দেখাশোনা করতে পারব না।’
সিঙ্গাপুরে করোনা সংক্রমণের প্রথম তিন মাস কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ না করে ভাইরাসটি দমনে ব্যবস্থা নিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছিল দেশটি। কিন্তু এপ্রিলেই সিঙ্গাপুরে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে ১৭ মার্চ পর্যন্ত দেশটিতে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৬৬। তবে এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৭৫ জনে।
এদিকে, নতুন করে আক্রান্ত হওয়া এক হাজার ব্যক্তির মধ্যে সিঙ্গাপুরের নাগরিক খুব কমই রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই প্রবাসী শ্রমিক বলে জানা গেছে।