আপনার জিজ্ঞাসা
বিয়েতে খরচ সম্পর্কে রাসূল (সা.) কী বলেছেন?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ১৭৪৫তম পর্বে চিঠির মাধ্যমে মো. জাহিদুল হাসান, লালবাগ, ঢাকা থেকে বিয়েতে কম খরচ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। অনুলিখনে ছিলেন সজীব খান।
প্রশ্ন : আমি শুনেছি রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে বিয়েতে খরচ যত কম, সেই বিয়েতে বরকত তত বেশি।’ এই হাদিস কতটুকু সঠিক? আর বিয়ের অনুষ্ঠানে খরচ সম্পর্কে রাসূল (সা.) কী বলেছেন?
উত্তর : রাসূল (সা.)-এর যে হাদিসটি উল্লেখ করেছেন, সেটি সহিহ হাদিস। আসলে বিয়েতে খরচ অতিরিক্ত করা বা বড় ধরনের আড়ম্বর করা, মানে অপচয় করে অন্য রকম একটা অবস্থা তৈরি করা, এটি আল্লাহর রাসূল (সা.) সুন্নাহর পরিপন্থী। আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর দেখানো পথ এবং নির্দেশনা পরিপন্থী; বরং রাসূল (সা.) যেটা বলেছেন সেটা হচ্ছে, সবচেয়ে বরকতময় বিয়ে হচ্ছে সেটি, যেখানে খরচ কম হয়ে থাকে।
কম খরচ বলতে মূলত এখানে যেটা বোঝানো হয়েছে সেটা হলো, একজন ব্যক্তির সামর্থ্য রয়েছে, সে সামর্থ্য অনুযায়ী লোকদের আপ্যায়ন করবে বা মেহমানদারি করবে। এটাই হচ্ছে কম খরচ। কিন্তু কম খরচ বলতে এটা বোঝায় না যে একেবারেই খরচ না করা, যেটাকে কৃপণতা বলা হয়ে থাকে। মানে লোকদের খাওয়ালেন না, আত্মীয়স্বজনকে দাওয়াত দিলেন না, বিয়ে হয়েছে জানালেন না, তাহলে এটা সৌন্দর্যের পরিপন্থী। কিন্তু বিয়ের মধ্যে সৌন্দর্যকে এবং বিয়ের কথা প্রচার-প্রকাশ করাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আবার এ ক্ষেত্রে সামাজিক সংস্কৃতির বিষয়ও আছে।
উদাহরণস্বরূপ, একজন ব্যক্তির অনেক সামর্থ্য আছে। তিনি অপচয় না করার ব্যাখ্যাতে গিয়ে এক কেজি ভালো খেজুর কিনে মসজিদে গিয়ে বিয়ে পড়িয়ে ফেললেন। এটা কম খরচ নয়, এটা কৃপণতা। এর চেয়ে তিনি যদি বিয়ের অনুষ্ঠানে তাঁর আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, গরিবদের দাওয়াত করে সুন্দরভাবে খাওয়ান এবং অপচয় না করেন, সেটাই উত্তম হবে।