আপনার জিজ্ঞাসা
পিরিয়ডের সময় কোরআন তেলাওয়াত করা যাবে কি?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ১৭৬৫তম পর্বে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার রিচমন্ড থেকে ই-মেইলে রেবেকা সুলতানা জানতে চেয়েছেন পিরিয়ডের সময় মেয়েরা কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবে কি না। অনুলিখনে ছিলেন মুন্সী আবদুল কাদির।
প্রশ্ন : মেয়েদের যখন পিরিয়ড হয়, তখন কি তারা কোরআন শরিফ থেকে যেকোনো সুরা তেলাওয়াত করতে পারবে? কোরআন শরিফটা শুধু আরবি নয়, সঙ্গে বাংলা তাফসিরও আছে।
উত্তর : পিরিয়ডের সময়ে মূলত কোরআনে কারিম তেলাওয়াত করার বিষয়ে আলেমদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। কিন্তু যতটুকু আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে, কোরআন ও হাদিসের আলোকে সেটা হচ্ছে, কোরআন তেলাওয়াত করার যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে তিনি তেলাওয়াত করতে পারেন। কিন্তু প্রয়োজন না হলে তেলাওয়াত না করাটাই হচ্ছে উত্তম। এটি মুখস্থ তেলাওয়াত করার বিষয়ে।
আর প্রয়োজনটা হচ্ছে এ রকম। ধরুন, তিনি একজন কোরআনে হাফেজ। অনেক সময় তেলাওয়াত না করার কারণে তিনি হয়তো ভুলে যেতে পারেন। অথবা ধরুন তিনি একজন শিক্ষক। তাঁর প্রয়োজন রয়েছে, এ জন্য তেলাওয়াত করতে পারেন। অর্থাৎ সুনির্দিষ্ট কোনো প্রয়োজন যদি থাকে, তাহলে তিনি মুখস্থ তেলাওয়াত করতে পারেন। তবে উত্তম হচ্ছে কোরআনে কারিম স্পর্শ না করা।
তবে তাফসির থাকলে কেউ কেউ তেলাওয়াতের বিষয়টিকে সম্পূর্ণ জায়েজ বলেছেন। এটি ইজতেহাদি মাসআলা। এ বিষয়ে আলেমদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে এবং গবেষণার বিষয় রয়েছে।
যেহেতু কোরআন বলতে শুধু আল্লাহর কালামকেই বোঝায়। এখন কোরআনের মধ্যে যদি অনুবাদ অন্যান্য তাফসির থেকে থাকে, তাহলে সেটাকে মোসহাব বলা হয়, অর্থাৎ এটাকে কোরআন বোঝায় না। এ জন্য একদল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, যদি কেউ স্পর্শ করে তা করতে কোনো অসুবিধা নেই।
কিন্তু এতে কোনো সন্দেহ নেই যে কোরআনে কারিমের আদব হচ্ছে তাহারতের সঙ্গে, অর্থাৎ পবিত্রতার সঙ্গে কোরআন শরিফ স্পর্শ করা এবং তেলাওয়াত করা। তবে আপনি যদি মনে করেন যে আপনার প্রয়োজন রয়েছে, তাহলে আপনি তেলাওয়াত করতে পারেন এবং তাফসির আপনি স্পর্শ করতে পারবেন।