লেনদেনের সেরাতে বিএসসির শেয়ার, মূলধন বেড়েছে ১৫৫ কোটি টাকা
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিবিধ খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) ১২১ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে গত সপ্তাহে (রোববার থেকে বৃহস্পতিবার)। যা মোট লেনদেনের চার দশমিক ২৩ শতাংশ একাই করেছে কোম্পানিটি। এতে সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে। অপরদিক সপ্তাহটিতে শেয়ারপ্রতি দর বেড়েছে ১০ টাকা ২০ পয়সা। যা কোম্পানিটির মোট শেয়ারের মাধ্যমে বাজারে মূলধন বেড়েছে ১৫৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, ডিএসইতে গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ারের সমাপনী দর দাঁড়ায় ১০০ টাকা ২০ পয়সা। যা আগের সপ্তাহের ৭ নভেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ৯০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি দর বেড়েছে ১০ টাকা ২০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোট শেয়ারের মাধ্যমে ডিএসইর বাজারে মূলধন বেড়েছে ১৫৫ কোটি ৫৮ লাখ ৫৭ হাজার ৪০৮ টাকা।
গেল সপ্তাহটিতে ৪১৩টি কোম্পানির দুই হাজার ৭৭০ কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সেখানে সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির ১২৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা মোট লেনদেনের চার দশমিক ২৩ শতাংশ। এছাড়া গত বৃহস্পতিবার অডিটেড সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) দাঁড়ায় ছয় দশমিক ২০ পয়েন্টে। পিই রেশিও হিসেবে কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে।
উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারের কোনো কোম্পানির পিই রেশিও যদি সিঙ্গেল ডিজিটে থাকে, তাহলে সেখানে বিনিয়োগ সম্পূর্ণ নিরাপদ ধরে নেওয়া হয়। এছাড়া পিই রেশিও ডিজিট যদি ১৫ পয়েন্ট পর্যন্ত অবস্থান করে, তবে সেখানেও বিনিয়োগ নিরাপদ বলে ধরা হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসাবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। সেই হিসেবে, ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানায় বিএসইসি। মানে পিই রেশিও ৪০ এর ওপরে গেলে বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। পিই রেশিও যতো বাড়বে ঝুঁকির মাত্রা ততো বাড়তে থাকবে।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২০২৫) প্রথম প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টম্বর) আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে পাঁচ টাকা ৯২ পয়সা। গত অর্থবছরের (২০২৩-২০২৪) প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টম্বর) শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে তিন টাকা ৩০ পয়সা। আলোচিত প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছে ১৪ টাকা ৪১ পয়সা। আর এই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১০৭ টাকা ৮৯ পয়সা।
২০২৩-২০২৪ সমাপ্ত অর্থবছরে (জুলাই-জুন) জন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। ওই অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছিল ১৬ টাকা ৩৭ পয়সা। সমাপ্ত বছরে শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছিল ৩১ টাকা আট পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছিল ১০১ টাকা ৯৭ পয়সা। ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আগামী ২২ ডিসেম্বর, বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২৪ নভেম্বর।
১৯৭৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। ‘এ’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১৫২ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। শেয়ার সংখ্যা ১৫ কোটি ২৫ লাখ ৩৫ হাজার ৪০টি। রিজার্ভে রয়েছে ৭০৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে পাঁচ দশমিক ২৫ শতাংশ, সরকারি ৫২ দশমিক ১০ শতাংশ, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ২৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। গত অর্থবছরের ৩০ জুন কোম্পানিটির দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দাঁড়ায় এক হাজার ৫৬৬ কোটি ১৭ লাখ ১০ হাজার টাকা।