একই ব্যাটিং ও অজুহাত আর কত?
বাংলাদেশের প্রতিটি সিরিজে দুটি জিনিস কমন। প্রথমত, দলের হতশ্রী ব্যাটিং। এরপর ম্যাচ শেষে অধিনায়কের চেনা কথা। আমরা পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াব। সেই পরের ম্যাচ সহসা আসে না বাংলাদেশ শিবিরে। যেমনটা কাটে না ব্যাটারদের ব্যর্থতা। ফলাফল, হারের বৃত্তে ঘুরপাক খেতে থাকে দল।
ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাঠে পরপর দুটি সিরিজে বিধ্বস্ত হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে পাড়ি জমায় বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ম্যাচে খারাপ করেনি তারা। মূল ম্যাচে বোলাররা চেষ্টা করেছেন সাধ্যমতো। তবে, এক বিভাগ দিয়ে ম্যাচ জেতা কখনও সম্ভব না। বাংলাদেশও তাই পেরে উঠছে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে প্রথম ম্যাচে হারতে হয়েছে ২০১ রানে।
৩৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটারের সম্মিলিত রান ৪৩! তাতে লিটন দাস খেলেন ১৮ বলে ২২ রানের ইনিংস। টেস্টের বিবেচনায় যা একেবারেই মূল্যহীন। সেটি যদি হয় দলের বিপদে, তাহলে প্রশ্ন ওঠে ব্যাটারের ক্রিকেটীয় জ্ঞান নিয়েও! দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসানের রান ছয় ও শূন্য। মুমিনুল হক করেন ১১ রান।
টেস্ট মানে ধৈর্যের খেলা। যত বেশি সময় ক্রিজে টিকে থাকা যায়, ব্যাটার চেষ্টা করেন সেটি। এতে, প্রতিপক্ষ বোলারদের মানসিকতায় ধাক্কা লাগে। ক্রিকেটে এসব কৌশল আদিম। সবাই জানে। তবু, আমাদের ব্যাটারদের বড্ড তাড়া। এর কারণ অজানা। অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি রান আসে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাট থেকে। তিনি ৪৫ রান করেন ৪৬ বলে। রানের হিসেবে ঠিক আছে, কিন্তু বলের হিসাব এবং সময়ের চাহিদা বিবেচনায় এটিও অর্থহীন। ক্রিজে টিকে থাকার মানসিকতাই নেই কারও।
এরপর আসা যাক, অধিনায়ক মিরাজের কথায়। ম্যাচ শেষে মিরাজ বলেন, ‘আমাদের বোলাররা দারুণ করেছে। তাসকিন ছয় উইকেট পেল। প্রথম ইনিংসে তাইজুলও ভালো বোলিং করেছে। কিন্তু, ব্যাটাররা ভালো করতে পারেনি। আমরা বেশ কিছু ভুল করেছি। তবে, খেলায় এসব হয়ই। আমরা জানি, ভুলগুলো কোথায়। আশা করি, পরের ম্যাচে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’
কথা একই। মাইকের সামনে শুধু চেহারাগুলো বদলায়। আরেকটি নতুন ম্যাচ আসে। সামনে আসে ব্যাটিংয়ের পুরোনো চিত্র আর ম্যাচ শেষে দলের প্রতিনিধির বলা মুখস্ত বুলি। কাজের কাজ যেটি, খেলায় মনোযোগ দেওয়া, ম্যাচে ফিরে আসা, খেলাটাকে খেলার মতো খেলা—সেসব হয় না।