চলতি বছর ৫৪০ কোটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট বাতিল করেছে ফেসবুক
চলতি বছর ৫৪০ কোটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
ভুয়া ও বিদ্বেষ ছড়ানোর উদ্দেশ্যে অ্যাকাউন্ট তৈরির চেষ্টা প্রতিহত করার ব্যবস্থা উন্নততর করা হয়েছে জানিয়ে গতকাল বুধবার একটি জবাবদিহিমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আমরা উন্নততর সুরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিদিন লাখ লাখ ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলার চেষ্টা রুখে দিচ্ছি।’
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই ২২০ কোটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট বাতিল করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ফেসবুকের মাসিক সক্রিয় (অ্যাকটিভ) ব্যবহারকারীর ৫ শতাংশই ভুয়া বলে স্বীকার করে বিশ্বের শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি। গত মে মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছিল ফেসবুক।
গত বছরের অক্টোবর থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত ছয় মাসে ৩০০ কোটির বেশি ভুয়া ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট বাতিল করার কথা জানিয়েছিল ফেসবুক। ফেসবুকের ইতিহাসে অ্যাকাউন্ট বাতিল করার ক্ষেত্রে এটি একটি রেকর্ড। এসব অ্যাকাউন্টের বেশিরভাগই খোলার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বন্ধ করে দেয় ফেসবুক।
এদিকে সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের বিষয়ে ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ বলেন, ফেসবুককে ব্যবহারকারীদের জন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখতে ‘প্রতিবছর শত শত ডলার বিনিয়োগ করে আসছে’। বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
‘অবশ্যই (ফেসবুক) কত লাভ করছে তার ওপর বিনিয়োগের বিষয়টি নির্ভর করছে। কিন্তু এটাই যে সঠিক পন্থা তা প্রশ্নাতীত।’
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে রাশিয়া সামাজিক মাধ্যমটিকে ব্যবহার করার অভিযোগ ওঠার পর থেকেই ফেসবুকের কন্টেন্ট পলিসি নিয়ে কথা হয়েছে বিস্তর। এ ছাড়া এ বিষয়ে ফেসবুক কতটা আন্তরিক, তা নিয়েও সমালোচনা সইতে হচ্ছে ফেসবুককে।
ফেসবুক বরাবরই বলে আসছে, তারা নিয়ম-নীতি ভঙ্গকারীদের পোস্ট চিহ্নিত করে সেগুলো সরিয়ে নেওয়ার পদ্ধতি প্রতিনিয়ত উন্নত করছে। আর এ কাজের মূলে আছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) প্রোগ্রাম। কারণ, ফেসবুকের ব্যাপ্তি এখন এতটাই বিশাল যে কেবল মানুষ দিয়ে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয় না।
সাধারণত ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই ফেসবুকে পোস্ট হওয়া সহিংস ছবি বা ভিডিও ফেসবুক ব্যবহারকারীরা কর্তৃপক্ষকে জানানোর আগে নিজ উদ্যোগেই শনাক্ত করে সেগুলো সরিয়ে নেয় ফেসবুক। তবে লাইভ সহিংস ভিডিওর ক্ষেত্রে, বিশেষ করে এ বছরের মার্চে নিউজিল্যান্ডের দুটি মসজিদে হামলার মতো ঘটনার ক্ষেত্রে, চেহারা না দেখা গেলে তা শনাক্ত করতে পারে না ফেসবুকের ব্যবহৃত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এ ছাড়া ঘৃণা ছড়ায় এমন পোস্ট শনাক্ত করার ক্ষেত্রে ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত বিষয়গুলো অনেক সময় আমলে নিতে ব্যর্থ হয় ফেসবুকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।