শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীদের আধিক্য বাড়ছে টুইটারে!
পশ্চিমা বিশ্বে বেশ কয়েক বছর ধরেই জনপ্রিয় এবং তীব্রতর হয়ে উঠছে শ্বেতাঙ্গদের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন। এমনকি আন্দোলনের বিস্তৃতি সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়েছে বেশ জোরেশোরে।
জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা থেকে বের হয়ে এসেছে, গত দুই বছরে টুইটারে অত্যন্ত প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীরা। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাশেবলের একটি প্রতিবেদনে জানা গেছে এ গবেষণার ব্যাপারে।
টুইটারে ব্যবহারকারীর সংখ্যা গত কয়েক বছরে না বাড়লেও শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমটি। জানা গেছে, ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত টুইটারে তাদের অংশগ্রহণ বেড়েছে ৬০০ শতাংশ! আর ২০১৪ সাল থেকে বেড়েছে ৩০০ শতাংশ। গবেষণার তথ্যমতে, ২০১৪ সালে টুইটারে জাতীয়তাবাদীদের সংখ্যা ছিল ছয় হাজার ৫৬৭। বর্তমানে সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৪০৬-এ!
শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদ বা ইংরেজিতে ‘হোয়াইট ন্যাশনালিজম’ বলতে মূলত পশ্চিমাদের ডানপন্থী আন্দোলনকে বোঝায়। এই আন্দোলনকে ‘নিও-নাজি’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন অনেকে। ২০১৬ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই আন্দোলনটি আরো শক্তিশালী হয়ে উঠছে এবং ক্রমশ তাদের প্রভাবও বেড়ে চলেছে। নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য টুইটার একটি বিশাল হাতিয়ার হয়ে উঠেছে আন্দোলনকারীদের জন্য।
এ ধরনের জাতীয়তাবাদীদের অন্যতম আপত্তির জায়গা হচ্ছে সে দেশে বসবাসকারী অভিবাসীরা। নিজেদের বর্ণ এবং জাতীয়তাবাদকে প্রসিদ্ধ রাখতে তারা সব সময়ই আপত্তি তুলে থাকে অভিবাসন নিয়ে।
আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেকটাই একই রকম আদর্শ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায়। তিনি তাঁর প্রতিটি বক্তব্যে একটি কথা সুনিশ্চিতভাবে বলে দিয়েছেন- ক্ষমতায় এলে খুব শক্ত হাতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করবেন। তাই ডানপন্থী আন্দোলনকারীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি।
সেই জনপ্রিয়তার বহিঃপ্রকাশ পাওয়া যাচ্ছে টুইটারেও। দেখা যাচ্ছে শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীরা টুইট করার সময় ট্রাম্পকে নিয়ে হ্যাশট্যাগ দিচ্ছেন। কেউ কেউ তাঁর হয়ে সরাসরি প্রচারণাতেই নেমে গিয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ‘শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদ’ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে বলেই ধারণা করা যাচ্ছে। এমনিতেই মার্কিন নির্বাচনী প্রচারে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবের মতো মাধ্যমগুলোর বেশ বড় ভূমিকা থাকে। সে ক্ষেত্রে বলা যায়, টুইটার এখন রয়েছে শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীদের দখলে।