নেকড়ে পর্যবেক্ষণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাফল্য
নেকড়েসহ বন্যপ্রাণীদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখার কাজটি সহজ নয় ৷ তবে বিষয়টি আরেকটু সহজ করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগানোর উপায় বের করেছেন সুইজারল্যান্ডের একদল তরুণ ৷
তাদের একজন অলিভিয়ে স্ট্যালি ৷ একটি বাক্স আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে নেকড়দের আরো ভালোভাবে পর্যবেক্ষণে রাখতে সহায়তা করতে চান তিনি ৷ স্ট্যালি বলেন, ‘ওয়াইল্ড-লাইফ-বক্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে নেকড়ের অবস্থান নির্ধারণ করতে পারে ৷ গর্জনের কারণে এটা সম্ভব হয় ৷ তিন কিলোমিটারের বেশি দূর থেকে নেকড়ের গর্জন শোনা যায় ৷ এভাবে আমরা একটা বড় এলাকার অবস্থা জানতে পারি ৷ নেকড়ে গর্জন করলে এই বাক্স রিয়েল টাইমে রেঞ্জারকে তা জানিয়ে দেয়।’
স্ট্যালির ডিভাইস দিয়ে ৫০০ মিটারের মধ্যে নেকড়ের অবস্থান শনাক্ত করা যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ক্যামেরা ট্র্যাপের মতো পদ্ধতি ব্যবহার করে নেকড়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে৷ কিন্তু নেকড়েরা এই পদ্ধতি এড়ানো শিখে গেছে ৷ তারা ফ্ল্যাশ আর শব্দ পছন্দ করে না। তাই ক্যামেরা ট্র্যাপ কোথায় আছে, তা মনে রাখে এবং সেগুলো এড়িয়ে চলে৷ আমাদের পদ্ধতির মাধ্যমে আমরা নেকড়েদের যোগাযোগ শনাক্ত করে তাদের ফাঁদে ফেলতে চাই ৷ এভাবে আমরা তথ্য সংগ্রহ করি।’
সুইজারল্যান্ডের লোজান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর সঙ্গে মিলে এই ডিভাইস তৈরি করেছেন স্ট্যালি ৷ মোবাইল যোগাযোগের মাধ্যমে শব্দগুলো সার্ভারে পাঠানো হয় ৷ আর অডিও ফাইলগুলো ইমেজে পরিণত করা হয় ৷ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইমেজগুলো পরীক্ষা করে সেগুলো নেকড়ের গর্জন কিনা, বোঝার চেষ্টা করে ৷
রেঞ্জার মার্কো বানসার বলছেন, এই ডিভাইসের কারণে নেকড়ের হামলা ঠেকাতে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নেকড়ের পরিবারের উপর নজর রাখা যেতে পারে ৷
স্ট্যালি বলছেন, সুইজারল্যান্ডের কয়েকটি এলাকার কর্তৃপক্ষ ও ডাব্লিউডাব্লিউএফ তাদের ডিভাইসের বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে ৷ এটি শুধু ইউরোপের মধ্যে ব্যবহার করতে হবে, এমন নয় ৷
তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছে, শুধু নেকড়ের মধ্যে থাকলেই চলবে না ৷ তাই দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে হাতি, সিংহ ও হায়েনাদের ক্ষেত্রে এই ডিভাইস পরীক্ষা করে দেখেছি, যা সফল হয়েছে ৷ নভেম্বরে আমরা ভারত যাব ৷ সেখানে বাঘ, চিতাবাঘ আর বন্য কুকুরের ক্ষেত্রে এটি পরীক্ষা করে দেখব৷’
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভবিষ্যতে বন্যপ্রাণী রক্ষার কাজটি অনেক সহজ করে দিতে পারে।