ছুটির দিনে
বাতাসের লোভে পালের বালিয়াতলি
বরগুনার মানুষের জনপ্রিয় ভ্রমণকেন্দ্র পালের বালিয়াতলি গ্রামের পায়রাপাড়। কয়েক বছর আগেও ওই জায়গায় ভাঙন-আতঙ্কে ছিলেন সেখানকার মানুষ। তবে ভাঙন থেকে জনজীবনকে রক্ষার প্রয়োজনে যে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানে আজ বসেছে ভ্রমণপিপাসুদের মিলনমেলা।
বরগুনা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরত্বে ৯ নম্বর এম বালিয়াতলি ইউনিয়নে অবস্থিত পালের বালিয়াতলি গ্রামটি। নদীপাড়ের একটুখানি উন্মুক্ত বাতাসের লোভে প্রতিদিন এখানে মিলিত হচ্ছে নানা বয়সের মানুষ। ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।
বেলা শেষে বিকেলের স্নিগ্ধতা নামার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভ্রমণপিপাসুদের দেখা। সন্ধ্যার গোধূলি অবধি দেখা মেলে পর্যটকদের। সন্ধ্যার পরে অন্ধকার হয়ে এলেই আগতদের ভিড় কমতে থাকে। বিকেলের সূর্যাস্তের সময়টা পালের বালিয়াতলিতে কাটানোর মজাই আলাদা। সেলফি কিংবা ফটোগ্রাফিতে মেতে ওঠেন আগত ভ্রমণকারীরা। অনেকেই আবার নৌকা ভাড়া করে ঘুরে আসেন পায়রা নদী থেকে।
সম্প্রতি ‘সবুজ বরগুনা’ নামে একটি সংগঠন ব্লকগুলোর গায়ে নানা রং দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছে পালের বালিয়াতলির এই বাঁধটি। এতে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে এখানকার সৌন্দর্য। সমগ্র বাঁধের পাশের মাটির রাস্তায় মোটরসাইকেল নিয়ে মজা করে ছুটে চলে বাইকাররা। মেঠো সেই রাস্তার কোল ঘেঁষেই এই বাঁধের অবস্থান। রাস্তার একপাশে গ্রাম—প্রকৃতি, ঘরবাড়ি, মাঠ, ধানক্ষেত; আর অন্য পাশে বয়ে চলছে সুবিশাল পায়রা নদী। পালের বালিয়াতলি গ্রাম থেকে কিছু দূর এগিয়েই পায়রা নদীটি মিশেছে বঙ্গোপসাগরে।
সারা দেশ থেকে ভ্রমণপিপাসু অনেকেই ইদানীং যাচ্ছে বরগুনার ভ্রমণকেন্দ্রগুলো দেখতে। তবে শুধু একটি কেন্দ্র ভ্রমণের জন্য যাঁরা দূর থেকে বরগুনা যাবেন, তাঁদের পোষাবে না। তাই বরগুনা জেলার অন্য সব ভ্রমণকেন্দ্রের তালিকায় যোগ করতে পারেন পালের বালিয়াতলি পায়রাপাড়ের নাম।
যাতায়াত
ঢাকা থেকে গাবতলী বা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় বরগুনার উদ্দেশে বাস ছেড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে ভাড়া ৫০০-৬০০ টাকা। লঞ্চেও বরগুনা যাওয়া যায়। কেবিন ভাড়া সিঙ্গেল ১২০০ টাকা, ডাবল কেবিন ২২০০ টাকা, ডেকে গেলে ৩০০ টাকা। বরগুনা শহর থেকে স্থানীয় যানবাহনে যেতে হবে পালের বালিয়াতলি। সে ক্ষেত্রে জনপ্রতি যাতায়াত খরচ লাগতে পারে ৮০-১০০ টাকা।
পালের বালিয়াতলিতে থাকার জন্য কোনো হোটেল-মোটেল নেই। তাই ফিরে এসে থাকতে হবে বরগুনা সদরেই। বরগুনা সদরে থাকা-খাওয়ার জন্য অনেক হোটেল রয়েছে। পালের বালিয়াতলি ভ্রমণের জন্য উৎকৃষ্ট সময় বিকেলবেলা। বাতাস আর রাতের জোছনার আলো গায়ে মেখে একটু রাত করে ফিরে গেলেও কেউ তাড়িয়ে দেবে না আপনাকে।