রোমাঞ্চকর রেমাক্রি
অপরূপ তিন্দু আর বিস্ময়কর বড় পাথর পেরিয়ে আমাদের সরু ইঞ্জিনচালিত নৌকা রেমাক্রির দিকে এগিয়ে চলেছে। যেতে যেতে ভাবছিলাম রেমাক্রি হয়তো পাহাড়ের ঢালে সাদামাটা কোনো একটা গ্রাম বা পাড়া অথবা বাজারের মতো হবে। কিন্তু আমাদের নৌকা যতই এগিয়ে চলেছিল, রেমাক্রি আরো অপূর্ব, আকর্ষণীয় ও রোমাঞ্চকর হয়ে উঠছিল।
রেমাক্রির যত কাছাকাছি আমরা যাচ্ছিলাম, অবাক হয়ে অপলক চোখে যা দেখছিলাম, সেটা হলো সাঙ্গুর শাখা, রেমাক্রির মুখ আর রেমাক্রি পাহাড়।
রেমাক্রি যে এতটা অপূর্ব, মনকাড়া আর বিস্মিত করবে, আমরা ভাবতেই পারিনি। ঠিক রেমাক্রিতে সাঙ্গুর তিন শাখার মুখে, যাকে রেমাক্রির মুখ বলে, সেখানে একটা ইট-পাথরের ঘাটে আমাদের নৌকা থামল। এরপর একে একে সবাই যার যার ব্যাকপ্যাক রেখে নদী থেকে পাহাড়ের চূড়া পর্যন্ত কংক্রিটের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে গেলাম, যেখানে পাহাড়ের ওপর বানানো হয়েছে রঙিন কটেজ, যার একটিতে আমাদের ঠিকানা হলো।
অপূর্ব ছিল আমাদের কটেজ, যেখানে বারান্দায় বসে বা শুয়ে উপভোগ করা যায় মেঘ-পাহাড়-অরণ্য। বিস্ময়কর রেমাক্রি জলপ্রপাতের গান। বারান্দায় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকলে মাঝেমধ্যে পাহাড়ের মেঘ এসে একটু ভিজিয়ে দিতে পারে আলতো পরশে। মিহি বাতাস প্রশান্তিতে ভরে দিতে পারে আপনার মনকে।
প্রকৃতির কাছে হার মেনে ইচ্ছেগুলো খুব অবাধ্য হয়ে মেঘের মতো উড়ে বেড়াতে শুরু করে। কখনো-কখনো ইচ্ছে হয় সাঙ্গুর বয়ে চলার সঙ্গে দূরে অজানায় ভেসে চলি, কখনো মনে হয় অচেনা অরণ্যে হারিয়ে যাই। আবার কখনো মনে হয় সাঙ্গুর বালুচরে গিয়ে অখণ্ড অবসর কাটাই।