হাতিরঝিল দেখাবে চক্রাকার বাস
জ্যামের শহর ঢাকা এ কথা রাজধানীর সবাই জানে। নানা চেষ্টা করেও এ সমস্যা থেকে মুক্তি মিলছে না নগরবাসীর। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় বসে কাঁটানো নগরবাসীর নিত্যদিনকার রুটিনে পরিণত হয়েছে। তবে তেজগাঁও, গুলশান, বাড্ডা, রামপুরা, মৌচাক ও মগবাজারের বাসিন্দাদের কাছে সেই সময় এখন অতীত। ম্রীয়মাণ হয়ে আসছে তাদের কাছে 'জ্যামের শহর' অপবাদ। জ্যাম আর নেই, সাথে আছে প্রকৃতির ছোঁয়া, বলা হচ্ছে হাতিরঝিলের কথা। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, জলাবদ্ধতা ও বন্যা প্রতিরোধ, ময়লা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, রাজধানীর যানজট নিরসন এবং শ্রীবৃদ্ধি করা এর উদ্দেশ হলেও অসংখ্য পর্যটকের দৈনন্দিন সময় কাঁটানোর অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এ প্রকল্প। এই প্রকল্পের সর্বশেষ সংযোজন 'হাতিরঝিল চক্রাকার বাস সার্ভিস'।
বাস সার্ভিসের এক নম্বর কাউন্টারে বসেন মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। কথা হলো তাঁর সাথে। তিনি জানালেন, চক্রাকারে চারটি বাস দিনে ৫০-৬০ বার বিএফডিসি-শুটিং ক্লাব-রামপুরা-মধুবাগ চক্রাকারে ঘোরে। বাসটিতে ১০ টাকা, ১৫ টাকা, ২০ টাকা এবং ৩০ টাকার টিকেটের ব্যবস্থা রয়েছে। পুরো হাতিরঝিল বাসে যদি কেউ ঘুরতে চায় তবে তাকে ৩০ টাকার টিকিট কাটতে হবে। কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা জানালেন, এ রুটের বাস যাতায়াতকারী ও পযর্টক উভয়ের জন্যই। সামনের ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন দুটি বাস সংযুক্ত হচ্ছে 'হাতিরঝিল চক্রাকাবাস সার্ভিস' বহরে এবং দুটিই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হবে বলে জানান তিনি।
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিফ হাসান। প্রথমবারের মতো এ বাস সার্ভিস উপভোগ করছেন। তাঁর অবশ্য ক্লাসের তাড়াও আছে। বিএফডিসি মোড় থেকে বাসে খুব অল্প সময়ের মধ্যে রামপুরায় ক্যাম্পাসের খুব কাছাকাছি এসে নামার সাথে সাথে উচ্ছ্বাসে ভরে উঠল তাঁর মন। বাস থেকে নামতেই উচ্ছ্বাস ভরা কণ্ঠে তাঁর বক্তব্য, ‘এত দ্রুত আসতে পেরে আমি সত্যিই আনন্দিত। এমনটা যদি পুরো ঢাকার অবস্থা হতো তবে আমাদের সমৃদ্ধির চাকাটাও হতো দ্রুত।’ এ ছাড়া বিষণ্ণতা দূরীকরণে নগরবাসীর জন্য হাতিরঝিলের 'বৃক্ষ-পানি-আলোর ঝলক' আশীর্বাদ বলে মনে করেন তিনি। চোখের খোরাক, মনের প্রশান্তি এবং ভালো সময় কাঁটানোর একটি অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র বলা যায় রাজধানীর হাতিরঝিলকে।
চাইলে আপনিও এক সন্ধ্যায় ঘুরে আসতে পারেন হাতিরঝিল। মাঝে বাস থেকে নেমে খেয়ে নিতে পারে ফুচকা কিংবা চটপটি। তবে হ্যাঁ একটু সাবধানে থাকবেন, কারণ এই এলাকায় প্রায়ই ছিনতাইয়ের খবর পাওয়া যায়।