ঘুরে আসুন
শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর
মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও যাঁরা বাংলা ভাষা রক্ষার দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম আবুল বরকত। যাঁরা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যেও অন্যতম তিনি। যার জন্য তিনি সবার কাছে পরিচিত শহীদ আবুল বরকত নামে। তাঁর এ আত্মত্যাগের স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পলাশীতে নির্মিত হয়েছে শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সে বিভীষিকাময় ইতিহাস এবং বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ বিলিয়ে দেওয়া শহীদ আবুল বরকতকে জানতে ঘুরে আসুন এ সংগ্রহশালায়।
সার্জেন্ট জহরুল হক হলসংলগ্ন পলাশী বাজারের পাশে ৩৩ শতাংশ জায়গার ওপর এ স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা নির্মিত হয়েছে। ২০১২ সালের ২৫ মার্চ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান এর উদ্বোধন করেন।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও জাদুঘরের প্রদর্শক মো. গোলাম মোস্তফা জানান, ‘শহীদ বরকতের ব্যবহৃত কাচ-পিরিচ, ব্যবহৃত ঘড়ি, হাতে লেখা চিঠি, ভাষা আন্দোলনের ওপর ডকুমেন্টারি, একুশে পদক (মরণোত্তর) ও তার ছবি রয়েছে এখানে।’
ভবনের নিচতলায় তাঁর ব্যবহৃত জিনিসপত্র ও ছবি রাখা হয়েছে। ওপর তলায় একটি পাঠাগার করা হয়েছে। পাঠাগারে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর পাঁচ শতাধিক বই রাখা হয়েছে। আরো বই সংগ্রহের কাজ চলছে।
গোলাম মোস্তফা আরো জানান, ‘শহীদ আবুল বরকতের মামাতো ভাই আর এম ত্বাহা ব্যবহার্যসামগ্রী, স্মৃতিচিহ্ন, হাতঘড়ি, একুশে পদক ও ১০ কপি ডকুমেন্টারি ফিল্ম জাদুঘরে হস্তান্তর করেন।’
শহীদ আবুল বরকত ১৯২৭ সালের ১৬ জুন ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। দেশ বিভাগের পর ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকায় আসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন।
১৯৫২ সালে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে তিনি মহান ভাষা আন্দোলনে শরিক হন এবং ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে পাক বাহিনীর গুলিতে মারাত্মক আহত হয়ে রাতে শাহাদাত বরণ করেন। শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০০৮ সালের ৩ অক্টোবর। ২০০৯ সালের ১৬ জুন এর নির্মাণকাজ শেষ হয়।
যেভাবে যেতে পারেন
রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে পলাশীর মোড় পর্যন্ত রিকশায় যাওয়া যায় সহজে। ভাড়া ৩০-৪০ টাকা। পলাশীর মোড়ে সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রবেশমুখেই শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা।
দর্শনার্থীদের জন্য রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে এ স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা।