ঈদের ছুটিতে পর্যটক বরণে প্রস্তুত বান্দরবান
উৎসব মানেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবানে ভ্রমণপিপাসু মানুষদের বাড়তি চাপ। এবারো ঈদের লম্বা ছুটিতে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত এখন পাহাড়ি জেলা বান্দরবান। ঈদকে সামনে রেখে জেলার আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটগুলো এবং জেলা সদরের আশপাশের হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, রেস্টহাউজ এবং গেস্টহাউজগুলোও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সাজানো হচ্ছে। পর্যটক হয়রানি বন্ধে পর্যটকদের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রশাসন।
প্রতিবছর ঈদের ছুটিকে সামনে রেখে বান্দরবানে পর্যটকদের আগমন ঘটে। এরই মধ্যে জেলা সদরের বেশির ভাগ হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট এবং গেস্টহাউস বুকিং হয়ে গেছে। আগামী ৭ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত পর্যটকদের বাড়তি চাপ থাকবে।
হলিডে ইন রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের রিসোর্টের সব কক্ষ এরই মধ্যে বুকিং হয়ে গেছে। আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত মোটামুটি টানা বুকিং রয়েছে। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবার পর্যটকদের অগ্রিম বুকিং কম হয়েছে। পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার শতভাগ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’
জেলা শহরের পালকি গেস্টহাউজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ শাহরিয়ার বলেন, আগামী ৭ জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত আমাদের গেস্টহাউজের অধিকাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। তবে অন্য বছরগুলোর চেয়ে এবার পর্যটকদের চাপ কিছুটা কম হবে বলে মনে হচ্ছে। তারপরও পর্যটকদের সেবায় গেস্টহাউজ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা এবং দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখাতে গাড়ি প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পর্যটনের অফুরন্ত সম্ভাবনাময় বান্দরবানে প্রকৃতির নির্মল ছোঁয়া পেতে ছুটে আসছে পর্যটকরা। পাহাড়ের ঝর্ণা, প্রাকৃতিক লেক, ঝুলন্ত সেতু, বাদুর গুহা, দেবতা পাহাড়, আলীর সুরঙ্গ এবং সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গসহ অসংখ্য পাহাড়।
এ ছাড়া বাংলার দার্জিলিং খ্যাত চিম্বুক পাহাড় এবং স্বপ্নীল নীলগিরি পর্যটন স্পটে গিয়ে মুগ্ধ পর্যটকরা। জেলা সদরের বালাঘাটায় নির্মিত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান বৌদ্ধ ধাতু স্বর্ণ জাদি জেলায় পর্যটনের ক্ষেত্রে যোগ করেছে নতুন মাত্রা।
বান্দরবানের পাহাড়ে বসবাসরত মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, বম, তঞ্চঙ্গ্যা, খুমি, খেয়াং, পাঙ্খো, চাকমা, চাক এবং লুসাইসহ ১৩টি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বসবাসের বৈচিত্র্যময় জীবনচিত্র পর্যটকদের কাছে বাড়তি পাওয়া।
আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে বান্দরবানে পর্যটকদের ঢল নামে। এবার তার ব্যতিক্রম ঘটবে না প্রত্যাশা। এরই মধ্যে আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট এবং গেস্টহাউজগুলো মোটামুটি ৮০ ভাগ বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটকদের বরণে প্রস্তুত এখন আবাসিক হোটেলগুলো।
জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, উৎসবে দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভ্রমণপিপাসু মানুষের ঢল নামবে এটিই স্বাভাবিক। বান্দরবানে সারাবছরই পর্যটকদের আগমন ঘটে। কিন্তু ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের বাড়তি চাপ লক্ষ করা যায়। এবারও ব্যতিক্রম হবে না। পর্যটকদের বরণে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, পর্যটকদের হয়রানি করা যাবে না। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রয়েছে।