আজ থেকে জার্মানির সীমান্তে কড়াকড়ি
ইউরোপের দেশ জার্মানির জনসংখ্যার ৬০ থেকে ৭০ ভাগ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন দেশটির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। তবে দেশটি সীমান্ত বন্ধের পক্ষে নয় বলে জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান। এরপর করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিলেও সীমান্ত বন্ধ করবেন না বলে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। কিন্তু ওই ঘোষণার কয়েক দিনের মধ্যে অবশেষে জার্মানিও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম বিল্ডের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, জার্মান সময় আজ সোমবার সকাল থেকে ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক ও লুক্সেমবার্গ সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। তবে নিয়মিত যাত্রী ও পণ্য পরিবহন চালু থাকবে। পর্যটনের জন্য বা জরুরি কোনো প্রয়োজন ছাড়া কাউকে এসব সীমান্ত দিয়ে জার্মানিতে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোর্স্ট সেহোফার, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান, বাভারিয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মারকুল স্যোডার, বাডেন-ভ্যুর্টেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী ভিনফ্রিড ক্রেটশমান, সানল্যান্ড প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী টোবিয়াস হান্স এবং রাইনলান্ড-পালাটিনেট প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মালু ড্রেয়ারের সঙ্গে টেলিফোন কনফারেন্সে কথা বলেন চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল।
শুধু করোনার সংক্রমণ নয়, অন্য দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের কেনাকাটা ঠেকানোও এ সিদ্ধান্তের অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিল্ড। ভবিষ্যতে আরো কড়াকড়িসহ সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্তও আসতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য দেশগুলোর সীমান্তে সাধারণত কোনো কড়াকড়িই থাকে না। তবে এরই মধ্যে ইইউ সদস্য বেশ কয়েকটি দেশ নিজেদের সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। জার্মানিও অবশেষে সে পথেই এগোলো।
এ সিদ্ধান্তের ফলে এখন প্রতিবেশী দেশগুলোর সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে জার্মান পুলিশ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। ধারণা করা হচ্ছে, সীমান্ত পেরোনোর সময় কাগজ পরীক্ষা করে অনেককেই জার্মানিতে প্রবেশ করতে না দিয়ে ফেরত পাঠানো হবে।
এ ছাড়া জার্মান সংবাদমাধ্যম স্পিগেল জানিয়েছে, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে ট্রেন চলাচলেও কড়াকড়ি আরোপ করছে। কমিয়ে আনা হচ্ছে ট্রেন চলাচলের হার, চালু হয়েছে বিশেষ সূচি। আজ সোমবার থেকে বনসহ বিভিন্ন শহরে বাসে টিকেট বিক্রি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। চালককে নিরাপদ রাখতে বন্ধ থাকবে বাসের সামনের দরজাও। কেবল পেছনের দরজা দিয়ে বাসে উঠতে পারবেন যাত্রীরা।
এরই মধ্যে করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে জার্মানির বিভিন্ন প্রদেশ ও শহর নিজেদের মতো করে ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া, সুইমিংপুল, ব্যায়ামাগারসহ নানা গণজমায়েতের স্থান বন্ধ করে দেওয়া। এ ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে।