আফগানিস্তানকে রক্ষা করার অঙ্গীকার তালেবানবিরোধী যোদ্ধাদের
আফগানিস্তানের পানশির প্রদেশের তালেবানবিরোধী যোদ্ধারা তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পানশিরের যোদ্ধারা আফগানিস্তানকে তালেবানের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রতিশ্রতিবদ্ধ হয়ে বলছেন, ‘আমাদের মাটিতে তাদের মুখ ঘষে দেব।’
পানশিরের এক জন যোদ্ধা এর আগে তালেবানের বিরুদ্ধে বিজয়ের কথা উল্লেখ করে পানশিরের নিরাপদ এক স্থান থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলেন, ‘আমরা মাটিতে তাদের মুখ ঘষে দিতে যাচ্ছি।’ তাঁর সঙ্গে তাল মিলিয়ে অন্য যোদ্ধারা তাঁদের হাত উঁচিয়ে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। আফগানিস্তানের খামা প্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএনআই’র বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে পানশিরের যোদ্ধারা পাথুরে পাহাড়ের চূড়া থেকে গভীর উপত্যকায় ভারী মেশিনগান থেকে গুলি চালিয়ে অঞ্চলটি বিদেশি বাহিনীর দখল থেকে রক্ষা করে আসছে। পানশিরের এই যোদ্ধারা হচ্ছেন তালেবান কাবুল দখল করে নেওয়ার পর সর্বশেষ শক্তিশালী বাহিনী ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের (এনআরএফ) অংশ।
কাবুল থেকে প্রায় ৯০ মাইল উত্তরে হিন্দু কুশ পর্বতমালায় পানশিরের উপত্যকাটি অবস্থিত। কয়েক মাসের মধ্যেই সরকারি বাহিনীকে যুদ্ধে পরাস্ত করলেও তীব্র প্রতিরোধের কারণে গুরুত্বপূর্ণ পানশির অঞ্চলটির দখল নিতে পারছে না তালেবান।
খামা প্রেসের প্রতিবেদনে জানা গেছে, পানশির ঘাঁটিতে তালেবানের হামলা ঠেকাতে এনআরএফ মেশিনগান, মর্টার ও বালুর ব্যাগ দিয়ে সুরক্ষিত পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বসিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হামভিস এবং পেছনে মেশিন অস্ত্রসজ্জিত পিকআপ ট্রাকের মাধ্যমে অঞ্চলটি পাহাড়া দিচ্ছেন এনআরএফ যোদ্ধারা। তাঁদের অনেককেই সামরিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে।
পানশির উপত্যকায় স্থানীয় বাহিনীর গড়া প্রতিরোধ তালেবানের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এ বাহিনীর নের্তৃত্বে রয়েছেন তালেবানবিরোধী হিসেবে সুপরিচিত আহমাদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমাদ মাসুদ।
এর আগে রাশিয়ার এক জন সাবেক ইমার্জেন্সি কর্মকর্তা ইউরি ব্রাজিনিকভ স্থানীয় গণমাধ্যম স্পুটনিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় পানশির ভ্যালির প্রতিরোধ যোদ্ধাদের এই কৌশলগত স্থানটি তালেবানের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখার সুযোগ রয়েছে।
আফগানিস্তানে ২০০১-২০০২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার মানবিক কার্যক্রমের নের্তৃত্ব দিয়েছেন ইউরি ব্রাজিনিকভ। তিনি বলেন, ‘এটি একটি শক্ত ভিত্তি দেবে। আপনারা এখানে মানবিক সহায়তা এবং কিছু চিকিৎসা সহায়তাও পাঠাতে পারবেন। এটি স্বাভাবিকভাবে একটি শক্তিশালী পয়েন্ট হিসেবে কাজ করছে, যা সাবেক সরকার বাহিনী রক্ষা করতে পারে।’