আফগানিস্তানে অনাহারে মারা যেতে পারে ১০ লাখ শিশু : ইউনিসেফ
জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেছেন, চলতি বছর ১০ লাখ আফগান শিশু চরম পুষ্টিহীনতায় ভুগতে পারে। তাদের খাবার ও সঠিক সেবার ব্যবস্থা না করা গেলে শিশুগুলো মারাও যেতে পারে।
মার্কিণ সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির খবরে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে গতকাল সোমবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর এ সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন।
হেনরিয়েটা বলেন, আফগানিস্তানের প্রায় এক কোটি শিশু মানবিক সহায়তা পেয়ে থাকে। আর এই সহায়তায়ই বেঁচে থাকার ব্যবস্থা হয় তাদের। এই আফগান শিশুদের সাহায্য করতে আন্তর্জাতিক মহল ও বিশ্বের ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। হেনরিয়েটা বলেন, ‘দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন।’
১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। এর আগে আফগান সরকারকে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা অর্থ সাহায্য দিয়েছে। কিন্তু তালেবান ক্ষমতায় আসার পর দেশটিকে দেওয়া সাহায্য বন্ধ করে দেয় আন্তর্জাতিক মহল।
মূলত মানবাধিকার ও নারী অধিকার ইস্যুতে তালেবানের যে অবস্থান, তা বদলাতেই এ চাপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ আফগানদের ওপর।
ঠিক এই পরিস্থিতিতে ইউনিসেফের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো সহায়তার বিষয়টি সামনে এনেছে। প্রয়োজনে তালেবান সরকারকে এড়িয়ে সেখানকার মানুষদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দিতে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে তারা।
এ পরিস্থিতিতে গতকাল অতিরিক্ত ছয় কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের মানবিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে এ অর্থ আফগানিস্তানে ব্যয় করা হবে।
এদিকে সবশেষ আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যকার সংঘর্ষের চিত্রও তুলে ধরেছেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর। তিনি বলেন, চলতি বছর সংঘর্ষে প্রায় ছয় লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এর অর্ধেকই নারী ও শিশু। তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত ও দরিদ্র দেশে কীভাবে কাজ করতে হয়, সেই মৌলিক সক্ষমতা ইউনিসেফের রয়েছে। আর আফগানিস্তানে ৭০ বছর ধরে কাজ করছে সংস্থাটি। এ কারণে আমরা জানি, আফগান শিশুদের জন্য কী প্রয়োজন।’