আমরা ব্রিটেনের রাজনীতির শিকার : ফ্রান্স
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ফ্রান্স থেকে চোরাপথে ব্রিটেনে ঢুকছে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা- যুক্তরাজ্যের এই অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছে ফ্রান্স। পাশাপাশি দেশটি পাল্টা অভিযোগ করেছে, এই সমস্যার জন্য মূলত ব্রিটেনই দায়ী।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেরাল্ড ডারমানিন সোমবার ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম সি নিউজ টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ সম্পর্কে বলেন, ‘(দুই দেশের) মধ্যে কিছু সমস্যা আছে, স্বীকার করছি; কিন্তু ব্রিটেনের উচিত নিজেদের অভ্যন্তরীণ নীতি ঠিক করা। তার আগ পর্যন্ত তারা আমাদের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলার নৈতিক যোগ্যতা রাখে বলে আমি মনে করি না।’
গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার এক হাজার ১৮৫ অভিবাসনপ্রত্যাশী ফ্রান্সের ক্যালাইস ও ডানকির্ক উপকূল থেকে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ব্রিটেনে প্রবেশ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল। অভিযোগে তিনি আরও বলেছেন, সম্প্রতি ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে ফ্রান্সের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ব্রিটেনে আসার হার বাড়ছে। আগের দিন, মঙ্গলবার এই সংখ্যা ছিল ৮৫৩।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্য বেরিয়ে যাওয়ার পর যথাযথ অনুমতি ছাড়া ব্রিটেনের সমুদ্রসীমায় ফ্রান্সের মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই তিক্ততা তৈরি হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে। সেই তিক্ততায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে এই ঘটনা।
এদিকে, প্রীতি প্যাটেলের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সি নিউজ টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গেরাল্ড ডারমানিন বলেন, ফ্রান্স থেকে যেসব অভিবাসনপ্রত্যাশী ব্রিটেনে পাড়ি দিয়েছেন, তাদের পূর্বপূরুষ ব্রিটেনের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে ফ্রান্সের ক্যালাইস ও ডানকির্কে বসতি স্থাপন করেছিলেন। এই দুটি অঞ্চলে বেশিরভাগ অপরাধ তাদের জন্যই সংঘটিত হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নারী ও শিশুপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ক্যালাইস ও ডানকির্কের ব্রিটিশরা। তারা এমন পরিস্থিতি এই দুই অঞ্চলে তৈরি করে রেখেছে যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তাদের নাগাল পায় না।’
‘সম্প্রতি ফ্রান্সে বসবাসরত ব্রিটিশ অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। সেই অভিযান থেকে বাঁচতেই এরা ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে চোরাপথে ব্রিটেনে যাচ্ছে। তারা জানে, চোরাপথে একবার ব্রিটেনে পৌঁছাতে পারলে থাকার সুযোগ পাওয়া যাবে, কম মজুরিতে কাজও মিলবে।’
‘ফ্রান্স ব্রিটেনের রাজনীতির শিকার হয়ে থাকতে চায় না। আমরা ব্রিটেনের সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, আপনারা আপনাদের অভ্যন্তরীণ নীতি কঠোর করুন। সেক্ষেত্রে আমরাও এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঠেকাতে ব্যবস্থা নিতে পারব।’