আস্থা বাড়ছে ইউক্রেনীয়দের, রাশিয়াকে ‘কোনো ছাড় নয়’
ইউক্রেনীয়রা তাঁদের জন্মভূমির কোনো অঞ্চলই রাশিয়াকে ছেড়ে দিতে রাজি নন, এমনকি তাতে যুদ্ধ বন্ধ হলেও নয়। খবর ভয়েস অব আমেরিকার।
কিয়েভের অদূরে, ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলের মফস্বল লাভিভে একটি আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছেন বুচা থেকে পালিয়ে আসা ২৫ বছর বয়সি তরুণী ইউলিয়া। চলমান সংঘাতে তাঁর জীবন থমকে গেছে।
ইউলিয়া বুচা ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন। কারণ জানতে চাইলে বলেন, ‘সেখানে বোমাবর্ষণ হচ্ছিল। আর বেশির ভাগ সময়ই ছিল আতঙ্কের।’
ইউলিয়ার মা জার্মানিতে চলে যান, কিন্তু ইউলিয়া ইউক্রেনেই থাকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, ‘এ আমার নিজের দেশ।’ তিনি চান না, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেনের কোনো অঞ্চল দিয়ে দেওয়াসহ রাশিয়াকে কোনোরকম ছাড় দিন। এমনকি তা যদি যুদ্ধ বন্ধের জন্যও হয়, তবুও নয়।
ইউক্রেনের অনেক অধিবাসীই মনে করেন, রাজধানী কিয়েভের পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে রাশিয়া ফিরে যাওয়ায় যুদ্ধ নিজের গতিতেই চলছে। কিয়েভের চারপাশে এবং দেশটির উত্তরাঞ্চলের আরও কিছু শহরে রাশিয়ার সামরিক তত্পরতা কমানোসহ শুধু ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চলকে ‘মুক্ত’ করার ওপর মনোযোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। এতে অনেক ইউক্রেনীয় অত্যন্ত খুশি হয়েছেন।
ইউক্রেনীয়রা রুশ ঘোষণাকে একটি অবশ্যম্ভাবী বিবৃতি হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মনে করছেন—ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনীর বীরত্বই রাশিয়াকে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ থেকে সরে আসতে বাধ্য করেছে এবং কিয়েভের রাশিয়ার অগ্রযাত্রার চেষ্টা থেমে গেছে।
রাশিয়ার আক্রমণ ‘হোঁচট খাওয়ায়’ ইউক্রেনের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে। যদিও ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা এখনও অব্যাহত রয়েছে এবং এ যুদ্ধ কীভাবে বন্ধ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনাও চলছে।
এ সপ্তাহে ইউক্রেন ও রাশিয়ার কুটনীতিকেরা তুরস্কে বৈঠক করেছেন। ইউক্রেন বলছে—নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলে দেশটি নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হতে প্রস্তুত। এবং রাশিয়ার আশঙ্কা দূর করতে তারা ন্যাটোতে যোগ দেবে না বলেও জানিয়েছে।
ইউক্রেনের প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে—ক্রিমিয়া উপদ্বীপের অবস্থান নিয়ে ১৫ বছরের জন্য পরামর্শের সময় নির্ধারণ। রাশিয়া জোর করে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল করে ২০১৪ সালে অবৈধভাবে তা অধিগ্রহণ করে।
এদিকে, বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া দনেৎস্ক ও লুহান্সকের অবস্থান নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও জেলেনস্কি পরে নিজেদের মধ্যে সরাসরি আলোচনা করবেন বলেও প্রস্তাবে বলা হয়েছে। ইউক্রেনের খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, যেকোন শান্তি চুক্তিকে গণভোটে পাস করাতে হবে।