‘ইউক্রেনে শুরু হয়েছে যুদ্ধের দ্বিতীয় ধাপ’
ইউক্রেনে যুদ্ধের দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রেই ইয়ারমাক। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে ইউক্রেনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছিলেন, রুশ বাহিনী ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে হামলা শুরু করেছে। এরপরই জেলেনস্কি নিজেই নিশ্চিত করেছেন, পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস এলাকায় হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। আর এ হামলার জন্য বহুদিন থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছিল রাশিয়া।
এদিকে, ইউক্রেনীয়দের আশ্বস্ত করে আন্দ্রেই ইয়ারমাক বলেছেন, ‘আপনারা আমাদের সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রাখুন। তারা অনেক শক্তিশালী।’
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আমরা এখন নিশ্চিত যে, রুশ বাহিনী দনবাস শহরের জন্য লড়াই শুরু করেছে। এ জন্য তারা বহুদিন থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। রুশ বাহিনীর একটি বড় অংশ এখন এ অঞ্চলে আক্রমণে রয়েছে।’
এর আগে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরে রুশ বাহিনী বোমাবর্ষণ করেছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় লভিভ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত সাত জন নিহত হয়েছে।
এ ছাড়া খারকিভের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দুজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সেখানকার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, লভিভ শহরে তিনটি সামরিক স্থাপনা এবং গাড়ির টায়ার মেরামতের দোকানের ওপর চারটি রকেট এসে পড়ে। এতে কমপক্ষে ১১ জন আহত হয়েছে। এ সময় বড় আকারের বিস্ফোরণ ঘটে এবং শহরের আকাশে ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলি উঠতে দেখা যায়। কাস্পিয়ান সাগরের দিক থেকে আসা যুদ্ধবিমান থেকে এসব রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে ধারণা ইউক্রেনীয় কমান্ডারদের।
ইউক্রেনে ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রুশ অভিযানে এতদিন লভিভের ওপর তেমন কোনো আক্রমণ হয়নি। তবে লভিভে এ আক্রমণ এমন এক সময়ে হলো, যখন এর আগের রাতেই বেশ কয়েকটি ইউক্রেনীয় শহরের ওপর রুশ বাহিনী বোমাবর্ষণ করেছে।
অন্যদিকে, খারকিভ শহরে আবাসিক ভবনের ওপর রুশ বাহিনী গোলাবর্ষণ করলে অন্তত দুজন বেসামরিক লোক নিহত হয়। রাজধানী কিয়েভেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, তাদের সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের ভেতরে মোট ৩১৫টি লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত হেনেছে। উত্তরের খারকিভ ও দক্ষিণের বন্দরনগরী ওডেসার কাছে মিকোলায়েভের ওপরও আক্রমণ হয়েছে।
সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চলের ওপর পূর্ণমাত্রার আক্রমণ চালানোর আগে ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনাগুলোকে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করছে রাশিয়া।