একই দিনে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পর আফগানিস্তান সফরে রাশিয়ার দূত
আফগানিস্তানে এক দিনের ঝটিকা সফর করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। তাঁর সফরের পরপরই আফগানিস্তানে পৌঁছায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দূত জামির কাবুলভের নেতৃত্বে রাশিয়ার একটি উচ্চ প্রতিনিধি দল। খবর ভয়েস অব আমেরিকার।
আফগান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তালেবান শাসকদের সঙ্গে বিশদ আলোচনা করেছেন। এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে চীনের বিরোধিতা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
এদিকে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাবুল সফর সমাপ্ত করার কিছুক্ষণ পরে রুশ প্রেসিডেন্টে দূত জামির কাবুলভের নেতৃত্বে রাশিয়ার একটি উচ্চ প্রতিনিধি দল আফগানিস্তানের রাজধানীতে পৌঁছায়।
ভয়েস অব আমেরিকার খবরে বলা হয়—তালেবান যখন যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র জোটবাহিনীর বিরুদ্ধে মারাত্মক বিদ্রোহ চালাচ্ছিল, সে সময়েও চীন তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছিল। তবে, বৃহত্তর বিশ্ব সম্প্রদায়ের মতো চীনও তালেবান সরকারকে এখনও কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেয়নি।
চীন ও আফগানিস্তানের মধ্যে প্রায় ৭৬ কিলোমিটার অভিন্ন সীমান্ত রয়েছে। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ-বিআরআই’র অধীনে পাকিস্তানে বিশাল অবকাঠামো প্রকল্পে চীন প্রায় আড়াই হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। উভয় দেশই চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর বা সিপিইসি নামে পরিচিত পথটি আফগানিস্তানে সম্প্রসারিত করতে চায়, যাতে সে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা যায়। তালেবান এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে।
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আফগানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকিরের বৈঠকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ট্রানজিট ও আঞ্চলিক সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি আফগানিস্তান থেকে মাদক পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার ওপর আলোচনা হয়েছে। তালেবান ক্ষমতা দখলের আগেও মস্কো তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রেখেছে।
আফগানিস্তানে বছরের পর বছর ধরে চলা যুদ্ধ এবং ক্রমাগত খরার ফলে উদ্ভূত মানবিক চাহিদা গত বছরের আগস্টে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর সাহায্য-নির্ভর দেশটিতে পশ্চিমা দেশগুলো তাৎক্ষণিক মানবিক সাহায্যের বাইরে অন্য সব রকমের সহায়তা স্থগিত করে এবং আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। একই সঙ্গে আফগাস্তিানের বৈদেশিক রিজার্ভের কোটি কোটি ডলার বাজেয়াপ্ত করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। এসব রিজার্ভের বেশির ভাগ যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে।