এতিমখানায় কিশোরীকে মারধর, তদন্ত করছে সৌদি আরব
সৌদি আরবে একটি এতিমখানায় এক কিশোরীকে নিরাপত্তা বাহিনীর নির্দয়ভাবে মারধরের ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার রাতে ওই ভিডিও অনলাইনে প্রকাশ পায় বলে জানায় বিবিসি।
ভিডিওর সত্যতা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভিডিওতে সাদা পোশাক পরা একদল পুলিশ ও কর্মকর্তাদের সৌদি আরবের দক্ষিণপশ্চিমের খামিস মুশাইত নগরীর একটি ‘সোস্যাল এডুকেশন হাউজে’ অভিযান চালাতে দেখা গেছে।
ভিডিও দেখে আরও মনে হয়েছে, এক কর্মকর্তা চিৎকার করতে থাকা এক কিশোরীর চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে একটি মাঠে নিয়ে আসছে। ওই সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে বেল্ট দিয়ে আঘাত করে।
আরো কয়েকজন মেয়েকে ধাওয়া করা হয় এবং কাঠের লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। কোন পরিস্থিতিতে এবং কবে নাগাদ এ ঘটনা ঘটেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তবে একজন টুইটার ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, তিনি ওই ভিডিও এডিট করেছেন।
তিনি লেখেন, ‘ওই মেয়েরা এতিমখানা থেকে তাদের যেসব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা সেগুলো ঠিকঠাকমত দেওয়ার দাবি জানালে কর্তৃপক্ষ তা বাতিল করে দেয়। তখন তারা কর্তৃপক্ষের দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে।’
পরে টুইটারে ওই নারী আরো কিছু ছবি পোস্ট করেন এবং দাবি করেন, ছবিতে ওই কিশোরীদের কয়েকজনের গায়ে কালশিরা দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া, একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাদের সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে ভিডিওটি প্রকাশের পর মানবাধিকারকর্মী এবং ভিন্নমতাবলম্বীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
দক্ষিণ-পশ্চিম আসির অঞ্চলের গভর্নর গত বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তিনি ভিডিওটি তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
ভিডিওটি এমন একটি সময়ে প্রকাশ পেয়েছে যখন সৌদি আরবে নারীদের অধিকার নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ ক্রমাগত বাড়ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশটির রাজপরিবার ও নেতাদের সমালোচনা করার দায়ে নোরাহ বিনতে সাইদ আল-কাহতানিকে এ সপ্তাহে ৪৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আর গত মাসের শুরুতে শুধুমাত্র টুইটারে ভিন্নমতাবলম্বীদের অনুসরণ করার কারণে একজন নারী অধ্যাপককে এবং যুক্তরাজ্যের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইডি শিক্ষার্থী সালমা আল-শিহাবকে ৩৪ বছরে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।