করোনার প্রতিষেধক পেতে জার্মান কোম্পানিকে আর্থিক প্রলোভন ট্রাম্পের
করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য একটি প্রতিষেধক (ভ্যাকসিন) নিজেদের হাতে পেতে যুক্তরাষ্ট্র জার্মানির একটি কোম্পানিকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছে বলে জার্মান রাজনীতিকরা অভিযোগ করেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
জার্মান সরকারের একটি সূত্র গতকাল রোববার রয়টার্সকে জানায়, জার্মানির বায়োটেক কোম্পানি কিউরভ্যাক একটি ভ্যাকসিন তৈরিতে অগ্রগতি সাধন করছে। আর এই কৃতিত্ব নিজেদের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
জার্মান পত্রিকা ওয়েল্ট অ্যাম সোনটেগ দাবি করে, বায়োটেক কোম্পানি কিউরভ্যাককে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গবেষণার ক্ষেত্রে প্রলুব্ধ করতে অর্থের প্রস্তাব দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে, কোম্পানিটিকে নিজেদের অবস্থানেই থাকার জন্য পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছে জার্মান সরকার।
জার্মান সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি আরো জানায়, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের জন্য শুধু যুক্তরাষ্ট্রই কৃতিত্ব নিতে চায়। আর এ ক্ষেত্রে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। তবে সরকারের কোন সূত্র থেকে এ খবর পাওয়া গেছে, তা জানায়নি পত্রিকাটি। এমন সংবাদের জবাবে জার্মানিতে মার্কিন অ্যাম্বাসাডর রিচার্ড গ্রেনেল দাবি করেন, ‘ওয়েল্ট অ্যাম সোনটেগ পত্রিকায় প্রকাশিত খবরটি ভুয়া।’
জার্মান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জার্মানি ও ইউরোপে ভ্যাকসিনের বিকাশের জন্য আগ্রহী জার্মান সরকার।
জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, কিউরভ্যাক কোম্পানির বিষয়ে সোমবার (আজ) আলোচনা করবে করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলা কমিটি।
এদিকে এক বিবৃতিতে কিউরভ্যাকের প্রধান বিনিয়োগকারী ডায়েটমার হপ এ বিষয়টি গুজব আখ্যা দিয়ে জানান, তিনি চান, শুধু নিজ অঞ্চলের মানুষকে সহযোগিতার জন্য নয়, বরং বিশ্বের সব মানুষের জন্য করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করবে কিউরভ্যাক।
ডায়েটমার হপ আরো জানান, ‘আমার দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের মাধ্যমে জার্মানি থেকেই যদি এটি অর্জন করা সম্ভব হয়, তাহলে আমি খুশি হব।’
এদিকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আজ সোমবার পরীক্ষামূলকভাবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্র। সিয়াটেলের কায়সার পারমানেনতে ওয়াশিংটন স্বাস্থ্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে ৪৫ জন স্বেচ্ছাসেবীর ওপর এ পরীক্ষা চালানো হবে। এ পরীক্ষার জন্য দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটস অর্থায়ন করছে। বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
এদিকে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগে সফলতা এলেও বাজারে আসতে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগতে পারে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ৪৫ জন স্বাস্থ্যবান যুবকের শরীরে এ পরীক্ষা চালানোর ক্ষেত্রে তাঁদের মধ্যে কোনো সংক্রমণ ঘটবে না। এ পরীক্ষা চালানোর মূল উদ্দেশ্য হলো, এটির ফলে বড় ধরনের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটে কি না, তা জানা। এরপর বড় পরিসরে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন তৈরির জন্য নেমে পড়েছে।