করোনা আতঙ্কে এবার বেলজিয়ামে লকডাউন
করোনাভাইরাস আতঙ্কে এবার সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে বেলজিয়াম সরকার। ১৮ মার্চ থেকে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত পুরো বেলজিয়ামে এই লকডাউন চলবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে সব ধরনের স্কুল-কলেজ, সভা-সেমিনার বন্ধ ঘোষণা করে বেলজিয়াম সরকার। জরুরি কাজ ছাড়া কাউকে বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। শুধু ফার্মেসি, খাবারের দোকান ও পোস্ট অফিস ছাড়া বাকি সব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জরুরি কাজ থাকলেও লোকজনের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেলজিয়ামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৯৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১৩০ জন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আছেন।
এরই মধ্যে বিশ্বের ১৭৬টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এর মধ্যে ইউরোপের অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। ইতালিতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত তিন হাজার ৪০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪২৭ জন। মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে এবার চীনকেও হার মানাল ইতালি। এরই মধ্যে চীন করোনার সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা একদমই কমিয়ে এনেছে। কিন্তু ইতালিতে সংক্রমণ কমে যাওয়ার কোনো নামগন্ধও নেই। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৪১ হাজার ৩৫ জনে পৌঁছেছে।
ইতালি ছাড়াও ইউরোপের মধ্যে স্পেনের পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। সেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩৩ জনে। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৮ হাজার ৭৭ জনে পৌঁছেছে। করোনা আতঙ্কে স্পেনের পথঘাট জনমানবশূন্য। এ ছাড়া স্পেনের পার্লামেন্টের চিত্রও ছিল এমন।
এদিকে, করোনা আতঙ্কে ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ার বা এলিসি প্রাসাদও এখন জনমানবশূন্য। সেখানে যেসব রাস্তায় লাখো মানুষের সমাগম হতো, এখন সেসব জায়গা ফাঁকা পড়ে আছে। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১ হাজার।
এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা প্রায় দেড়শ। আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ২৬৯ জনে। জার্মানিতে ৪৪ জন মৃতের পাশাপাশি আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৩২০ জন। সুইজারল্যান্ডে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ১৬১ জন। নেদারল্যান্ডসে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৭৬ জনের। আর আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৪৬০ জন।
এরই মধ্যে ইউরোপের দেশগুলোতে মহামারি মোকাবিলায় ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক বরাদ্দ দিয়েছে ৭৫০ বিলিয়ন ইউরো।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ১৭৮ জনে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ৪৬ হাজার ৭২২ জন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৬ হাজার ৫৪ জন। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বার্তা সংস্থা বিএনও নিউজ এ খবর জানিয়েছে।