কানাডায় পরিত্যক্ত স্কুলে ২১৫ শিশুর গণকবরের সন্ধান
কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া অঙ্গরাজ্যের কামলুপ্স শহরে আদিবাসী শিশুদের একটি পরিত্যক্ত আবাসিক স্কুলে গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে ২১৫টি শিশুর দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
কানাডার এক সময়কার সর্ববৃহৎ আবাসিক বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত কামলুপস ইন্ডিয়ান রেসিডেনসিয়াল স্কুলে বহু বছর পূর্বে কানাডার আদিবাসী শিশুদের ধরে এনে ভর্তি করা হতো।
কানাডার ফাস্ট নেশন কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত সপ্তাহের শেষের দিকে গ্রাউন্ড রাডার যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে এসব লাশের হদিস পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এখানে তিন বছরের শিশুর লাশও রয়েছে।
গত শুক্রবার ফাস্ট নেশন কর্তৃপক্ষ জানায়, এখানে আরও অসংখ্য লাশ পাওয়া যেতে পারে। কারণ এখনও অনেক জায়গায় অনুসন্ধান চালানো বাকি আছে।
উনিশ শতক থেকে ১৯৭০-এর দশক পর্যন্ত কানাডা সরকারের অর্থায়নে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আদিবাসী শিশুদের ধরে আনা হতো এসব বোর্ডিং স্কুলে, যাতে তারা কানাডার মূল সমাজের শিক্ষা ও সংস্কৃতি গ্রহণ করতে পারে। তাদের জোরপূর্বক খ্রিষ্টধর্মে ধর্মান্তরিত করা হতো এবং নিজস্ব ভাষা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম করতে দেওয়া হতো না।
অভিযোগ আছে, শিশুদের গালাগালি এবং তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতনও করা হতো। ধারণা করা হয়, এসব স্কুলে প্রায় ছয় হাজার শিশুর মৃত্যু হয়।
এর আগে ২০০৮ সালে কানাডা সরকার পার্লামেন্ট এসব স্কুলে শারীরিক ও যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করে। প্রায় পাঁচ বছর আগে ট্রুথ কমিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব স্কুলে অন্তত তিন হাজার ২০০ শিশুর মৃত্যু হয় নির্যাতন এবং অবহেলার কারণে। এ ছাড়া ১৯১৫ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত অন্তত ৫১ জনের মৃত্যু হয়।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার প্রধান জন হরগান বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ঘটনা। বোর্ডিং স্কুলগুলোর ভয়াবহতাকে পুনরায় সবার সামনে নিয়ে এসেছে এই ঘটনা।’
কামলুপ্স ইন্ডিয়ান আবাসিক স্কুল ১৮৯০ সালে চালু হয়ে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত গির্জার অধীনে বোর্ডিং স্কুল হিসেবে পরিচালিত হয়। এরপর কেন্দ্রীয় সরকার এর দায়িত্ব নিয়ে ১৯৭৮ সালে এটি বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত সাধারণ স্কুলের মতোই পরিচালনা করে।