গাম্বিয়াই কেন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে?
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যাবিষয়ক মামলাটি মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সংস্থা ওআইসির প্রতিনিধি হিসেবে দায়ের করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং নৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকেই গাম্বিয়া মামলাটি দায়ের করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির বিচারমন্ত্রী আবুবকর।
প্রক্রিয়ার শুরুটা হয় গত বছর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ওআইসি মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর স্থলে দেশটির বিচারমন্ত্রী আবুবকর তামবাদোকে পাঠানোর মধ্য দিয়ে। ঢাকায় পৌঁছানোর পর আবুবকর অন্য দেশের মন্ত্রীদের সঙ্গে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির সফর করেন। ওই বৈঠকে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য গাম্বিয়ার নেতৃত্বে একটি কমিটি করার সিদ্ধান্ত নেয় ওআইসি। সেখানে এ-সংক্রান্ত যাবতীয় কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় গাম্বিয়াকে। বাংলাদেশসহ ওআইসির সদস্যদের সহযোগিতা নিয়ে গাম্বিয়া গত ১১ নভেম্বর মামলাটি দায়ের করে।
গাম্বিয়াকে বেছে নেওয়ার কারণ হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ও গণহত্যাবিষয়ক বিচার প্রক্রিয়া বিষয়ে দেশটির বিচারমন্ত্রী আবুবকর তামবাদোর অগাধ জ্ঞান রয়েছে। ৪৭ বছর বয়সী আবুবকর রুয়ান্ডা গণহত্যা-সংক্রান্ত মামলার কৌঁসুলি হিসেবে কাজ করেছেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।
মঙ্গলবারের শুনানি শেষে অন্যান্য দেশ থাকতে কেন গাম্বিয়াই আইসিজেতে মামলাটি দায়ের করেছে, তার উত্তর দেন আবুবকর। তিনি বলেন, ‘কেন গাম্বিয়া নয়? গাম্বিয়া আন্তর্জাতিক সংস্থাটির সদস্য। অন্যান্য দেশের মতো গাম্বিয়াও গণহত্যা কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ। আমরা বিশ্বকে দেখাতে চাই যে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করতে সামরিক শক্তি বা অর্থনৈতিক শক্তির প্রয়োজন হয় না। গণহত্যা কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে নৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকেই আমরা রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিতে এ লড়াই করছি।’
মামলা পরিচালনার কাজে আবুবকরকে যুক্তরাষ্ট্রের আইনি প্রতিষ্ঠান ফলি হগ সহায়তা করছে। এই ফলি হগ মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির মামলায় বাংলাদেশের পক্ষে আইনি প্রতিষ্ঠান ছিল।