জর্জিয়া ও মিশিগানে ট্রাম্পের মামলা খারিজ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গণনার মধ্যেই মিশিগান ও জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্প শিবিরের করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন স্থানীয় বিচারকেরা। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
জর্জিয়ায় করা মামলায় অভিযোগ তোলা হয়, রিপাবলিকান পর্যবেক্ষক চ্যাথাম কাউন্টির ব্যালটের স্তূপে একজন ভোট গণনাকর্মীকে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে আসা ৫৩টি পোস্টাল ব্যালট যুক্ত করতে দেখেছেন। জর্জিয়ায় ভোটের দিন সন্ধ্যা ৭টার আগে ডাকযোগের ভোট নির্ধারিত স্থানে পৌঁছানোর নিয়ম।
এজন্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্য হিসেবে জর্জিয়ায় আইনি পদক্ষেপ নেয় ট্রাম্প শিবির। যেসব জায়গায় ব্যালটে ‘প্রতারণা’ হয়েছে, সেসব জায়গায় ভোট গণনা থামানো হবে বলে অঙ্গীকার করেছেন ট্রাম্প। তবে দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি তিনি।
মামলা খারিজ করে জর্জিয়ার সুপিরিয়র কোর্টের বিচারক জেমস বেস বলেছেন, ‘ব্যালট নিয়ে অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, মিশিগান অঙ্গরাজ্যে ব্যালট গণনা বন্ধ করতে মামলা করে ট্রাম্প শিবির। যদিও ওই অঙ্গরাজ্যে এরই মধ্যে বাইডেন জয়ী হয়ে ১৬টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন।
ট্রাম্পের মামলা প্রসঙ্গে মিশিগান আদালতের বিচারক সিনথিয়া স্টিফেন জানান, এ মামলা চালিয়ে যাওয়ার কোনো ভিত্তি তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।
এদিকে, পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে ভোটের দিনের তিনদিন পর আসা ডাকযোগের ব্যালট গণনার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন রিপাবলিকানরা। ওই অঙ্গরাজ্যে এখনো ভোট গণনা শেষ হয়নি।
এছাড়া, উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্পশিবির পুনরায় ভোট গণনার আবেদন জানিয়ে মামলা করেছে।
এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডাকযোগের ব্যালট গণনা বন্ধের দাবিকে অন্যায্য, বিপজ্জনক এবং দায়িত্বহীন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সাবেক আইন কর্মকর্তা লিসা গ্রেইভস।
লিসা গ্রেইভস বলেন, ‘সংবিধানকে অসম্মান করেন, এমন ব্যক্তির পক্ষেই ভোট গণনা বন্ধের মতো অসাংবিধানিক, অন্যায্য, বিপজ্জনক এবং অসংগত দাবি করা সম্ভব। আইনের প্রতি যে ট্রাম্পের কোনো শ্রদ্ধা নেই, এটা স্পষ্ট। পরাজয়ের আভাস পেয়ে ভোট গণনা বন্ধের জন্যে মামলা করে প্রতিটি নাগরিকের ভোট গণনার অধিকারকে অসম্মান করেছেন ট্রাম্প।’
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই উপসহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গণনা বন্ধের দাবি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে আগে কখনো শোনা যায়নি। প্রতিটি ভোট গণনা হবে, এটাই গণতন্ত্র। ব্যালট গণনার জন্য সংবিধানে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়েছে।’
ফল ঘোষণার বাকি থাকা পাঁচ অঙ্গরাজ্যের চারটিতেই ট্রাম্প এগিয়ে থাকলেও নেভাদায় এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার মধ্যে নেভাদা, পেনসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, জর্জিয়া ও আলাস্কার ভোটের ফলাফল এখনো মেলেনি। এগুলোতে এখনো ভোট গণনা চলছে। এর মধ্যে পেনসিলভানিয়ায় ২০টি, নর্থ ক্যারোলাইনায় ১৫টি, জর্জিয়ায় ১৬টি, আলাস্কায় তিনটি ও নেভাদায় ছয়টি মহামূল্যবান ইলেকটোরাল ভোট আছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের প্রজেকশন অনুযায়ী, নেভাদায় ৮৪ শতাংশ ভোট গণনা হয়েছে, যার ৪৯ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বাইডেন। আর ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট। এখানে জয় পেলে আকাঙ্ক্ষিত ছয়টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটই হতে পারে বাইডেনের হোয়াইট হাউসে যাওয়ার চাবিকাঠি।
অন্যদিকে আবারও প্রেসিডেন্ট হতে হলে ট্রাম্পকে নেভাদাসহ পাঁচটি অঙ্গরাজ্যের সব (৬০টি) ইলেকটোরাল ভোটই পেতে হবে।