জাপোরিজ্জিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে পরিদর্শকদের ঢুকতে দেবে রাশিয়া
ইউক্রেনের জাপোরিজ্জিয়া পরমাণুভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দলকে অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ফোনালাপের পর রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে বিশেষজ্ঞদের অনুমতি দেওয়ার কথা জানায়।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস পরমাণু বিদ্যুকেন্দ্রের নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বর্তমানে ইউক্রেন সফরে রয়েছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন, ‘রাশিয়াকে অবশ্যই বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু জ্বালানি এজেন্সির (আইএইএ) পরিদর্শকদের বিদ্যুৎকেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে।’
জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা–আইএইএ’র প্রধান রাফায়েল গ্রসি রাশিয়ার এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। গ্রসি এর আগে জানিয়েছিলেন, তিনি নিজে পরিদর্শক দলের নেতৃত্ব দিতে চান। ক্রেমলিনের বিবৃতির পর তিনি বলেছেন, ‘চরম এক অস্থিতিশীল সময়ে এটি গুরুত্বপূর্ণ যে, বিশ্বের অন্যতম বড় পরমাণুভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে নতুন করে যেন এমন কোনো কিছু করা না হয়।’
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা অভিযোগ করে আসছেন, রাশিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সেনা ঘাঁটি বানিয়ে নিয়েছে। সামরিক সরঞ্জাম, অস্ত্রশস্ত্র ও প্রায় ৫০০ সেনা সেখান থেকে হামলা পরিচালনার কাজে নিযুক্ত রয়েছে।’
গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠককালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় ‘স্বেচ্ছায়’ রুশ হামলার প্রতিবাদ করেন।
এর আগে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে ইউক্রেনের জাতীয় গ্রিড থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাশিয়া নিজেদের গ্রিডে যুক্ত করতে চাইছে বলেও অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ইউক্রেনের কর্মীদের দিয়েই কোনো মতে উৎপাদন চালু রয়েছে। তবে, এর নিয়ন্ত্রণ রুশ সামরিক বাহিনীর হাতে।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালু করে রাশিয়া। এর দুই সপ্তাহের মধ্যেই মার্চের শুরুতে জাপোরিজ্জিয়া পরমাণুভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রাশিয়ার দখলে চলে যায়। যুদ্ধ শুরুর আগে ইউরোপের সবচেয়ে বড় এই পরমাণুভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউক্রেনের মোট চাহিদার ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। বর্তমানে ইউক্রেনীয় কর্মীদের দ্বারা কোনোমতে এটির উৎপাদন চালু থাকলেও নিয়ন্ত্রণ রয়েছে রুশ সামরিক বাহিনীর হাতে। বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সেনা প্রত্যাহারের আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করেছে রাশিয়া।